সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০০৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের শুরুতে এক টেলিভিশন বক্তব্যে সরকারি সেবা বিতরণে তাদের সম্ভাব্য সরকার কর্তৃক প্রযুক্তির বহু ব্যবহারের ওপর জোর দেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর তার দলের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ কর্মসূচি রূপকল্প ২০২১-এর মূল উপজীব্য, যার বাস্তবায়নের মূল লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। সেই হিসাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের এক যুগ পূর্তির দিন ছিল ১২ ডিসেম্বর। এখন দেশের ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলায় ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে জনগণকে ২০০ রকমের সেবা দেয়া হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও দেশে তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটি শিল্প বলে কিছু ছিল না। এখন আইটি একটি সম্ভাবনাময় শিল্প খাত। আজকের দিনে তরুণ প্রজন্মকে স্বাবলম্বী করার ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বর্তমানে অন্যান্য খাতে চাকরির সুযোগ কমে এলেও ফ্রিল্যান্সিংয়ের কারণে অসংখ্য তরুণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বর্তমানে দেশে সাড়ে ছয় লাখ সক্রিয় ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। সরকার এখন ফ্রিল্যান্সারদের পরিচয়পত্রও দিচ্ছে।
মনে আছে আশির দশকেও টেলিফোনে কথা বলার জন্য বুকিং দিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হতো। কখন লাইন পাওয়া যাবে, সেটিও ছিল অনিশ্চিত। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, একটি ল্যান্ডলাইন সংযোজনের জন্য নব্বইয়ের দশকের শুরুতে আমাকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সুপারিশ নিতে হয়েছিল। আর এখন সেলফোনে শুধু বাংলাদেশে নয়, দুনিয়ার যেকোনো প্রান্তে যেকোনো সময় কথা বলা যাচ্ছে। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে দেখেছি, অনেকটা জোর করেই ‘আমারও একটি বই আছে’র মতো ডেস্কটপ বিক্রি করতে হয়েছে। সেই সময়ে যেখানে একটি পারসোনাল কম্পিউটার বা পিসিতে তথ্য ধারণের ক্ষমতা ছিল কয়েক মেগাবাইট, এখন সেখানে ছোট ছোট ল্যাপটপেও তথ্য ধারণ ক্ষমতার হিসাব গিগাবাইট ছাড়িয়ে টেরাবাইটে চলে গিয়েছে। একজন ব্যবসায়ী আমেরিকায় বসেও বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার নৌকায় থেকেও জেলেরা আপনজন থেকে দূরে নন। আমার এক সহকর্মী এই করোনাকালের প্রথম চার-পাঁচ মাস টাঙ্গাইলে বসে দেশে-বিদেশে গ্রাহকের অনেক প্রযুক্তিসংক্রান্ত সমস্যা মিটিয়েছেন। দুনিয়ার যেকোনো বিষয়ে হাতের কাছে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, যা কয়েক দশক আগেও ছিল কল্পনাতীত।
প্রযুক্তি, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের প্রায় প্রতিটি পর্যায়ে অটোমেশনের ছোঁয়া লেগেছে। সরকারি এমনকি ব্যক্তি পর্যায়েও নতুন নতুন টেক পার্ক গড়ে উঠছে। সেসবের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যেও। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের এখন যে রফতানি, এক দশক আগেও তা ভাবা যেত না। আউটসোর্সিংয়ের আয় বাড়ছে। এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলেও অনেকের বিশ্বাস।
অনেকেই মনে করেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে অগ্রগতির যে ধারা সূচিত হয়েছে, তাকে আরো এগিয়ে নিতে অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা আরো বাড়াতে হবে। ইন্টারনেটের ব্যয় কমাতে হবে। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়াতে হবে।
হাতে হাতে স্মার্টফোন, বাসায় ব্রডব্যান্ড সংযোগ আর মোবাইল ইন্টারনেট বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে গেছে নতুন এক সময়ে। এতে জীবনযাত্রা যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি নানা খাতে তৈরি হয়েছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। বেড়েছে কর্মসংস্থান। দেশে বসেই বাইরের দুনিয়া থেকে প্রশিক্ষণ, ডিগ্রি মিলছে, যা আগেই বলেছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে এ দেশের তরুণরা বিদেশ থেকে আয় করছেন। ঘরে বসেই করা যাচ্ছে অনেক কাজ। তবে এই ডিজিটাল যুগের সুবিধা যেন সবার জন্য নয়। ঢাকার একটি পরিবার প্রযুক্তি ব্যবহারের যে সুবিধা ভোগ করছে, মফস্বল শহরের একটি পরিবার সেই সুযোগ পাচ্ছে না। আরেক বাধা হলো সুবিধা নেয়ার ক্ষেত্রে অনেকের আর্থিক অসচ্ছলতা। দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা সাশ্রয়ী মূল্যে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে না পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাও সবার হাতের কাছে আসবে না।
কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, সরকারের এখন লক্ষ্য হচ্ছে ২০২১-২৩ সালের মধ্যে পঞ্চম প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা বা ফাইভ-জি চালু করা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস, ইন্টারনেট অব থিংসের (আইওটি) মতো ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির বিকাশ ঘটানো। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এরই মধ্যে বলেছেন, সরকার তার লক্ষ্যের চেয়ে বেশি অর্জন করেছে। সামনের লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে ৭০০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপির একটি দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে তুলে ধরা এবং ২০৪১ সাল নাগাদ দেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নেটওয়ার্ক রেডিনেস ইনডেক্স (এনআরআই) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে সুযোগ কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে দেশগুলোর প্রবণতা পরিমাপ করে। তাদের ২০২০ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৫, ভারতের অবস্থান ৮৮, পাকিস্তান ১১১, ভিয়েতনাম ৬২, মালয়েশিয়া ৩৪। উল্লিখিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শক্তিশালী সূচকগুলো হলো মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্রামীণ ও আর্থসামাজিক ব্যবধান কমিয়ে আনা। এছাড়া রয়েছে আয়বৈষম্য, মোবাইল শুল্ক, স্কুলে ইন্টারনেট সুবিধা, মোবাইল ফোনসেটের মূল্য কমিয়ে আনা। প্রযুক্তি খাতে সরকারের বিনিয়োগের সদিচ্ছা ও সফটওয়্যার ব্যবহার বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো।
এক যুগ আগের চেয়ে দেশে অবশ্যই ব্যান্ডউইডথের দাম কমেছে। ২০০৯ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিল ২৭ হাজার টাকা, এখন তা মাত্র ৪০০ টাকা। ব্রডব্যান্ড গ্রাহকের সংখ্যা এখন ৮৬ লাখ। আড়াই বছর আগে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণের পর নিজেদের স্যাটেলাইট ব্যবহার করে দেশীয় চ্যানেলগুলো এখন সম্প্রচার চালাচ্ছে।
গত এক যুগে মোবাইল ব্যাংকিং খাত অনেক এগিয়েছে। শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সবাই এ সেবার সুফল ভোগ করতে পারছে। ২০১১ সালে চালু হওয়া এ খাতে নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা গেল অক্টোবরে ছিল ৯ কোটি ৬৪ লাখেরও বেশি এবং মাসিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৩ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা।
ডিজিটাল বাংলাদেশের আরেক অগ্রগতি ই-কমার্স খাতের প্রসার। ই-ক্যাব জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের সদস্য সংখ্যা ১ হাজার ৩৫০। এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ই-কমার্স খাতের বার্ষিক আকার ছিল ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা করোনা মহামারীতে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকায়। আমি প্রায় প্রতিনিয়তই ই-কমার্সের মাধ্যমে কাঁচাবাজার, ফলফলাদি ও দুগ্ধজাত পণ্য ক্রয় করছি।
দেশে ইন্টারনেট ও টেলিকম সুবিধাও বেড়েছে। বিটিআরসির সর্বশেষ হিসাবে দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটির বেশি। তবে এদের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের সংখ্যাই বেশি, যা ১০ কোটির অধিক।
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির আবেদন, জন্মনিবন্ধন, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ নাগরিক সেবা নিতে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। অনলাইনে এসব সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজও সহজ হয়েছে।
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে টেলিমেডিসিন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। পত্রিকান্তরে জেনেছি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কল সেন্টার ১৬২৬৩-তে ফোন করে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ১৭ জন। বর্তমানে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি ডিজিটাল সেবা ৫০ হাজার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছেছে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট জরিপে ১১৫তম স্থান অর্জন করেছিল। তবে ২০২০ সালে এসে চার ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৯। এছাড়া ই-পার্টিসিপেশন সূচকেও বাংলাদেশ পিছিয়েছে। ২০১৮ সালে অবস্থান ছিল ৫১। ২০২০ সালে এসে তা হয়েছে ৯৫। ই-গভর্নমেন্ট জরিপে ভারতের অবস্থান ১০০, পাকিস্তান ১৫৩, ভিয়েতনাম ৮৬, মালয়েশিয়া ৪৭।
উল্লিখিত এনআরআই ইনডেক্সে বাংলাদেশের দুর্বল সূচকগুলো হচ্ছে মোবাইল অ্যাপস, ইন্টারনেট ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন, দক্ষ প্রযুক্তিবিদের অভাব, নিয়ন্ত্রক সংস্থার মান, ইন্টারনেটে কেনাকাটা, হাইটেক রফতানি, ইন্টারনেট ব্যবহার, ব্যবসা করার স্বাচ্ছন্দ্য ও ইন্টারনেট সুবিধা।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা এখন পর্যন্ত অনেকটাই শহরকেন্দ্রিক। গ্রাম বা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এখনো সবখানে এই সুবিধা পৌঁছেনি। বিটিআরসির এ বছরের অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮৬ লাখের বেশি। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বলছে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ৮০ শতাংশ ব্যবহূত হয় বিভাগীয় শহরে।
কেবলডটকো ইউকে নামের একটি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেটের দাম পর্যালোচনা করে। তাদের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দামে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭, যা প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। এছাড়া মোবাইল ইন্টারনেটের দামে বাংলাদেশের অবস্থান ১৯। এখানেও বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে।
এখনো অনলাইনে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) সেবা চালু হয়নি। ব্যবসার সব সেবা অনলাইনে দেয়া, কর দেয়া, রিটার্ন জমা দেয়ার মতো কাজগুলো শুরু হলেও তা বিস্তৃত হয়নি। ভূমি ডিজিটালাইজেশন করার কাজ শেষ হয়নি। ইন্টারনেটের ব্যবহার নিরাপদ করা এবং অপপ্রচার-গুজব রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। থানা, আদালত এবং জেলখানাকে প্রযুক্তিগতভাবে সম্পৃক্ত করা যায়নি বলে এখনো অনেকে বছরের পর বছর বিনা বিচারে বা বিনা অপরাধে জেল খাটছেন।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) বলেছে, ২০০৮ সালে তাদের নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২৭০, এখন সে সংখ্যা ১ হাজার ৫৯৬। ২০০৬ সালে আইটি খাতে ২৫ হাজারের বেশি লোক কাজ করত। এখন সেই সংখ্যা ১০ লাখ। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে রফতানি ছিল ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা, এখন এর পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা।
আগেই বলেছি, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ও অনলাইনে লেনদেনের অনেক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার আরো যতটা হতে পারত, তা হয়নি। ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স থেকে শুরু করে একটি ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য যেসব প্রক্রিয়া রয়েছে, তা আরো প্রযুক্তিবান্ধব হতে পারত। অনেকেরই চিন্তা, করোনাকালীন যেহেতু অনলাইন ব্যাংকিং ও লেনদেনের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে, সেহেতু ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোয় সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে। তা সুরক্ষিত রাখার অবশ্যই একটি সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আরো সচেতন হতে হবে।
অনেকেই ভাবছেন, নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ এবং সামগ্রিক বাস্তবায়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে টার্গেটভিত্তিক তালিকা প্রণয়ন ও কার্যকরী ব্যবস্থাপনায় ডাটা অ্যানালিটিকসের ব্যবহার ও এনআইডি ডাটাবেজের সঙ্গে সম্পৃক্তকরণ করা যেতে পারে। তাতে সমাজের বয়স্ক ব্যক্তি এবং নভেল করোনাভাইরাসের সম্মুখযোদ্ধা যারা রয়েছেন, তাদের সহজেই নির্বাচন করা যেতে পারে এবং তাতে ভ্যাকসিনের সামগ্রিক লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনা অনেক সহজতর হবে।
আনন্দের বিষয় হচ্ছে, দারিদ্র্য বা আঞ্চলিক বৈষম্যের কারণে ‘ডিজিটাল ডিভাইড’ কাজ করলেও দেশের সর্বোচ্চ মহল থেকে মনোযোগ এবং উৎসাহ, সেই সঙ্গে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, শিক্ষার অনেকটা আন্তর্জাতিকীকরণ, মধ্যবিত্তের বিকাশ ও ব্যক্তি খাতের অগ্রগতির ফলে প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে সবার বিশ্বাস। প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে দেশে-বিদেশে প্রশংসনীয় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অনেক মেধাবীর অংশগ্রহণও এ ধারাকে বেগবান করবে।
[মতামত লেখকের নিজস্ব]
মামুন রশীদ: প্রাইসওয়াটারহাউজকুপারস বাংলাদেশের পার্টনার