ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) ২০২৫ সালের মর্যাদাপূর্ণ হার্ভার্ড হেলথ সিস্টেমস ইনোভেশন হ্যাকাথনে বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র আঞ্চলিক কেন্দ্র বা রিজিওনাল হাব হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এ উদ্যোগে ইউআইইউর সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ডিইআইইডি)। প্রতি বছর হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের হেলথ সিস্টেমস ইনোভেশন ল্যাবের (এইচএসআইএল) সহযোগিতায় হ্যাকাথন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এ প্রতিযোগিতাটির ষষ্ঠ সংস্করণ চলছে, যেখানে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ একটি ‘রিজিওনাল হাব’ হিসেবে বাংলাদেশের সব ছাত্র-ছাত্রীর জন্য এ বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুবিধা নিশ্চিত করেছে।
এ আন্তর্জাতিক ইভেন্টটি উচ্চতর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এআই-চালিত সমাধান বিকাশের জন্য শীর্ষস্থানীয় উদ্ভাবকদের একত্রিত করে। পূর্ববর্তী সংস্করণগুলো আফ্রিকায় ডিজিটাল স্বাস্থ্য এবং এশিয়া ও লাতিন আমেরিকায় ডায়াবেটিসজনিত যত্নের মতো চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করেছে, যার ফলে এসব ভৌগোলিক এলাকায় বিভিন্ন প্রভাবশালী স্টার্টআপ কোম্পানির উদ্ভাবন ঘটেছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উদ্ভাবন ল্যাব হলো একটি বিশ্বব্যাপী গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ল্যাব যা তার গবেষণা, শিক্ষা, অনুবাদ এবং উদ্ভাবনী কার্যক্রম ব্যবহার করে শিক্ষার্থী, সরকার, বেসরকারি খাত, বহুপক্ষীয় সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে নীতি ও অনুশীলন প্রচার এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উদ্ভাবনের বিস্তারকে ত্বরান্বিত করার জন্য কাজ করে।
২০২৫ সালের হ্যাকাথনের মূল প্রতিপাদ্য হলো উচ্চমূল্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গঠনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। এ উদ্যোগে বিশ্বে ২০টির অধিক রিজিওনাল হাব স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় (অস্ট্রেলিয়া), কিংস কলেজ লন্ডন (যুক্তরাজ্য), কোচ বিশ্ববিদ্যালয় (তুরস্ক), সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় (চীন), এনটিইউ (সিঙ্গাপুর) এবং বাংলাদেশ থেকে ইউআইইউ।
১১-১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য দুই দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা মাল্টিডিসিপ্লিনারি দল গঠন করে এআই-চালিত স্বাস্থ্যসেবা সমাধান উদ্ভাবনে কাজ করবে। অভিজ্ঞ মেন্টরদের সহযোগিতায় আইডিয়াগুলো শাণিত করা হবে এবং তা বিচারকদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। প্রতিটি আঞ্চলিক হাবের বিজয়ী দলগুলো গ্লোবাল মূল্যায়ন পর্বে অংশ নেবে। সবচেয়ে সম্ভাবনাময় উদ্ভাবনগুলো এইচএসআইএল ভেঞ্চার ইনকিউবেশন প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত হবে, যেখানে চার সপ্তাহের মেন্টরশিপ, ফান্ডিং স্ট্র্যাটেজি ও বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ প্রদান করা হবে। এ হ্যাকাথন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষক, তরুণ পেশাজীবী এবং উদীয়মান স্টার্টআপগুলোসহ সবার জন্য উন্মুক্ত। অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্যসেবা, পাবলিক হেলথ, মেডিসিন, ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স এবং বিজনেসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসার সুযোগ রয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা তিন-পাঁচ সদস্যের দল গঠন করে অংশগ্রহণ করতে পারবে, যেখানে নতুন ও প্রাথমিক পর্যায়ের আইডিয়াগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হবে। সম্পূর্ণ সমাধানের চেয়ে সম্ভাবনাময় নতুন ধারণার বিকাশই এখানে মূল লক্ষ্য। দলগুলোর কাছে সমস্যা, সমাধান ধারণা, বিকাশ এবং উপস্থাপন করার জন্য ৪৮ ঘণ্টার সীমিত সময়সীমা থাকবে। এ বিষয়ে আইডিয়াগুলো হতে পারবে—ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য রেকর্ড বিশ্লেষণ, রোগ নির্ণয় এবং পর্যবেক্ষণের উন্নতি, স্বাস্থ্য সম্পর্কে সহায়তা চ্যাটবট, স্বাস্থ্য সাক্ষরতা, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য, শিশুচিকিৎসায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য সমসাময়িক স্বাস্থ্যবিষয়ক উদ্ভাবনী প্রকল্প।