অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট

ছবির ফ্রেমে বাংলাদেশ

ছবির ভাষা নিঃশব্দ হলেও তার প্রকাশ বলিষ্ঠ, গভীর আর প্রাণবন্ত। আর সেই ভাষায় যখন কথা বলে গোটা একটি দেশ, তখন প্রতিটি ফ্রেম হয়ে ওঠে সময়ের, মানুষের, অনুভবের জীবন্ত দলিল।

ছবির ভাষা নিঃশব্দ হলেও তার প্রকাশ বলিষ্ঠ, গভীর আর প্রাণবন্ত। আর সেই ভাষায় যখন কথা বলে গোটা একটি দেশ, তখন প্রতিটি ফ্রেম হয়ে ওঠে সময়ের, মানুষের, অনুভবের জীবন্ত দলিল। ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের ইনডিপেনডেন্ট ফটোগ্রাফি ক্লাব আয়োজন করেছে এমনই এক অনন্য আলোকচিত্র উৎসব—এফ ইলেভেন সি শার্প: সিজন টু। দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এ প্রদর্শনী শুধু ফটোগ্রাফির প্রদর্শনী নয়, এটি হয়ে উঠেছিল একটি আত্মপ্রকাশের মঞ্চ এবং সৃষ্টিশীলতার যাত্রাপথ।

২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সাবমিশনের সময়ে গোটা বাংলাদেশ যেন ক্যামেরা হাতে তুলে নিয়েছিল নিজেদের গল্প বলার জন্য। এ সময়ে জমা পড়ে ৭ হাজার ৪৫৬টি আলোকচিত্র, যা পাঠিয়েছেন ১ হাজার ১৩৮ জন অংশগ্রহণকারী। তাদের পাঠানো একক আলোকচিত্র ও ফটো স্টোরিগুলোতে ধরা পড়ে বাংলাদেশের বহুরূপী রূপ—শহর ও গ্রাম, আনন্দ, কষ্ট, ইতিহাস ও বর্তমানের নিপুণ সংমিশ্রণ। অংশগ্রহণকারীদের বয়স ১৬ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে হওয়ায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে এ প্লাটফর্মের সর্বজনীনতা।

দুই গুণী আলোকচিত্রশিল্পী সাইফুল হক ওমি এবং সরকার প্রতীকের বিচারে নির্বাচিত হয় ৪৯টি একক ছবি ও সাতটি ফটো স্টোরি, যা জায়গা পায় চূড়ান্ত প্রদর্শনীতে। পুরো এক্সিবিশনের ডিজাইন করেন অভিজিৎ শুভ। এরপর তিন পর্বে প্রদর্শনীগুলো অনুষ্ঠিত হয় ভিন্ন আবহে। প্রথমটি ৮-১০ এপ্রিল ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে, যার উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ম. তামিম। দ্বিতীয় প্রদর্শনী ১১-১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত অ্যা অখিম ট্রস্টার এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক মোস্তফা জামান। ১৮ এপ্রিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত হয় প্রদর্শনীর তৃতীয় পর্ব। সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয় আয়োজন। ২০ এপ্রিল আইইউবিতে অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী অনুষ্ঠান।

প্রদর্শনীগুলোতে ভিড় করেন শিক্ষার্থী, পেশাদার ফটোগ্রাফার, সাংবাদিক, শিল্পানুরাগীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। ছবির ভাষায় যেন গোটা দেশ এক হয়ে গিয়েছিল একই ছাদের নিচে। আইপিসির সভাপতি আহমেদ রামি বলেন, ‘এ সাফল্যের সাক্ষী হতে পেরে আমরা গর্বিত। অংশগ্রহণকারী, স্বেচ্ছাসেবক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’ ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মো. সজিদ রহমান বলেন, স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা। তাদের ভালোবাসা ও নিষ্ঠা ছাড়া এ আয়োজন সম্ভব হতো না।’

‘এফ ইলেভেন সি শার্প: সিজন টু’ এখন কেবল একটি প্রদর্শনী নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছিল গল্প বলার এক সৃজনশীল আন্দোলনে। নবীন ও অভিজ্ঞ আলোকচিত্রীরা এখানে নিজেদের অন্তর্জগৎকে প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছেন—ছবির মাধ্যমে বলা গল্পের ভেতর দিয়ে। এ আয়োজন গড়ে তুলেছে এমন এক সেতুবন্ধ, যেখানে মিলেছে অনুভব, উপলব্ধি এবং শিল্পের গভীর সম্মিলন।

আরও