দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অবদান রাখার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী এক ভূমিকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স। কয়েক বছর ধরেই উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে স্পন্সর ছাড়াও খেলোয়াড়দের নিয়ে নানা আয়োজন করতে দেখা যায় বেসরকারি এ বিশ্ববিদ্যালয়কে। আগামী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) দলটির জার্সিতে শোভা পাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির লোগো। গায়ানায় অনুষ্ঠিতব্য গ্লোবাল সুপার লিগে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়বে রংপুর রাইডার্স। আর রাইডার্সদের এ যাত্রায় পাশে থাকছে উচ্চ শিক্ষালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন জাতীয় পর্যায়ের ৩০ জন ক্রীড়াবিদ। এছাড়া ফার্স্ট ডিভিশন ও সেকেন্ড ডিভিশনে খেলেছেন কিংবা বিসিবির কোনো লীগে খেলেছেন এমন প্রায় ৫০ জন ক্রীড়াবিদ উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। জাতীয় ক্রিকেট দলের শাহরিয়ার নাফীস ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ও বিবিএর প্রভাষক। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। এছাড়া রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান, ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, নাবিল সামাদসহ নারী ক্রিকেটার জাহানারা আলমও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স ও রংপুর রাইডার্স যৌথভাবে উদ্যোগ নেয় নতুন বোলিং প্রতিভা অনুসন্ধানের। গত বিপিএল থেকেই বোলারস হান্ট নামের এ উদ্যোগের শুরু। এ হান্টের মাধ্যমে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের পাঁচজন শিক্ষার্থী সুযোগ পান রংপুর রাইডার্সের নেটে বোলিং করার। ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেন ৩০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন পাঁচজন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা রংপুর রাইডার্সের পেশাদার ক্রিকেটারদের কাছ থেকে বোলিং টিপস এবং তাদের সঙ্গে বোলিং করার সুযোগ পান। এ উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পেশাদার ক্রিকেটারদের কাছ থেকে টিপস নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলছেন নিজেদের।
বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ সুবিধা থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ কোচ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্ট টিমে। স্কলার্স স্পোর্টস ক্লাব নেটওয়ার্ক সাফল্যের একটি উদাহরণ, যেখানে অনেক গ্র্যাজুয়েট পেশাদার খেলাধুলা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স মাঠের বাইরেও ক্রীড়াবিদদের সহায়তা করছে। স্কলারশিপ প্রদান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দলগুলোকে স্পন্সর করা, একাডেমিক সময়সূচি শিথিল এবং তাদের যথাযথ ক্যারিয়ার নির্দেশনার মাধ্যমেও সহায়তা করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট টিম সপ্তাহে দুইদিন অনুশীলন করেন, যেখানে বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা তাদের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন টিপস শেয়ার করেন। প্রতি বছরই আয়োজিত হয় ইন্ট্রা ইউনিভার্সিটি টুর্নামেন্ট। যেখানে প্রতিটা দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পেশাদার খেলোয়াড় এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা অংশ নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল, সাইক্লিং, বিলিয়ার্ড, টেবিল টেনিস খেলার ওপরও বিশেষ জোর দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির সাইক্লিস্ট তামাদ বিল খায়েরের রয়েছে অনেকগুলো জাতীয় রেকর্ড। বাংলাদেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সাইকেলে বর্তমানে এভারেস্ট বেজ ক্যাম্প পাড়ি দিচ্ছেন এ শিক্ষার্থী।
ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স স্পোর্টস ক্লাবের সভাপতি মো. ইশতিয়াক ইয়াকুব সোহাগ বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের স্পোর্টস ক্লাবে ৯০ জনের বেশি সদস্য রয়েছেন। ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবলসহ অন্যান্য স্পোর্টসের ক্ষেত্রেও আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বোর্ড অব ট্রাস্টিজসহ গোটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি বেশ ইতিবাচক। স্পোর্টসে ক্যারিয়ায় করতে গেলে অনেক সময় পড়ালেখায় গ্যাপ তৈরি হয়, এ গ্যাপ রিকভারের ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সে বেশ সাপোর্টিভ পলিসি রয়েছে। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ের খেলাধুলায়ও আমাদের ইউনিভার্সিটি বেশ সরব।’
ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের চিফ কো-অর্ডিনেটিং অফিসার (সিসিও) ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য আব্দুল হাসিব সিদ্দিক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ক্রীড়াঙ্গনের একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্বব্যাপীই বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবগুলোর মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ের অনেক বড় বড় তারকা উঠে আসে। শ্রীলংকায় সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনের মতো নামকরা খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে ইউনিভার্সিটি টিম থেকে। আমরাও চাই, ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের একটি টিম বড় বড় লিগে অংশ নেবে। সে উদ্যোগের অংশ হিসেবেই ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে একটি সেতুবন্ধের পথে হাঁটছে। ক্রীড়াঙ্গনে আমরা অবদান রাখতে চাই, তাই সব লেভেলের ক্রীড়াবিদদের আমরা স্কলারশিপ দিয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দিচ্ছি। বিসিবির কোনো লিগ খেললও আমরা তাকে স্কলারশিপ দিই।’