দুই চাকায় ‘তিন শূন্যের’ স্বপ্ন

পরিবেশ সুরক্ষায় সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে এবং টেকসই ভবিষ্যতের বার্তা ছড়িয়ে দিতে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সাইকেল চালিয়ে ছুটে চলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী।

পরিবেশ সুরক্ষায় সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে এবং টেকসই ভবিষ্যতের বার্তা ছড়িয়ে দিতে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সাইকেল চালিয়ে ছুটে চলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। ‘টেকসই পৃথিবী গড়ি, নেট-জিরো কার্বন মেনে চলি’ এবং ‘দুই চাকায় ঘুরি, দূষণ রোধ করি’—এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়ার সাহসী ও ব্যতিক্রমধর্মী এ যাত্রায় রয়েছে পরিবেশ সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয়।

এ অভিযাত্রায় অংশ নিয়েছেন রাবির দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীন আলম ও মো. আল-আমীন এবং ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফরহাদ মিয়া (রবিন)। ঈদের দ্বিতীয় দিন ৩ এপ্রিল তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু করেন তারা, যা শেষ হবে দেশের দক্ষিণ প্রান্ত টেকনাফে।

তাদের এ দীর্ঘ সাইক্লিং অভিযাত্রায় পাড়ি দিতে হবে দেশের ১৪টি জেলা। পথে পথে তারা পরিচিত হবেন দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে এবং জনসাধারণের মাঝে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন।

বর্তমানে তারা বাংলাবান্ধা থেকে রংপুর হয়ে বগুড়ায় পৌঁছেছেন এবং এখন টাঙ্গাইলের পথে রয়েছেন। এরপর পর্যায়ক্রমে তারা টাঙ্গাইল, ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার হয়ে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সাইক্লিং করে অভিযাত্রা শেষ করবেন।

রাবির এ শিক্ষার্থীরা বলেন, এ যাত্রা শুধু শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নয়; এটি একটি সামাজিক উদ্যোগ, যার লক্ষ্য পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আমরা চাই মানুষের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনতে এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে।

তারা আরো জানান, তাদের এ প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য হলো নেট-জিরো কার্বন নিঃসরণ অর্জনের লক্ষ্যে জনসচেতনতা গড়ে তোলা। পাশাপাশি ৩ আর নীতি—Reduce, Reuse, Recycle—বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্জ্য হ্রাস, পুনর্ব্যবহার ও পুনঃপ্রক্রিয়াকরণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে চান তারা। এছাড়া তারা ‘৩ জিরো’ লক্ষ্য—Zero Unemployment (শূন্য বেকারত্ব), Zero Poverty (শূন্য দারিদ্র্য) এবং Net-Zero Carbon Emission (নেট-জিরো কার্বন নিঃসরণ)—এ তিন বিষয়কে সামনে রেখে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা পৌঁছে দিতে চান।

শাহীন আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, দেশজুড়ে ঘুরছি, মানুষের সঙ্গে কথা বলছি, পরিচিত হচ্ছি—সব মিলিয়ে দারুণ লাগছে। আমরা যেসব জেলা অতিক্রম করছি, প্রতিটি জেলাতেই একটি করে গাছ রোপণ করছি এবং সেখানকার মানুষের সঙ্গে পরিবেশ বিষয়ে আলোচনা করছি। নেট জিরো কার্বনসহ পরিবেশ সচেতনতামূলক নানা বিষয়ের ওপর কাজ করছি। বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের পাশাপাশি মানুষকে পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করছি। কীভাবে আমরা বায়ুদূষণ করি এবং তা রোধে আমাদের করণীয় কী—এসব বিষয় নিয়েও সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করছি।’

আরও