বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন ও অন্যান্য

নতুনদের যা জানা জরুরি

বিশ্ববিদ্যালয় সম্ভবত জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা, যেখানে ভালো লাগা ও ভয় দুটোই পাশাপাশি থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয় সম্ভবত জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা, যেখানে ভালো লাগা ও ভয় দুটোই পাশাপাশি থাকে। এ জীবন পরিবর্তনকারী অভিজ্ঞতা শুধু ভালো ফলাফলের জন্য নয় বরং একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য দরকার, যিনি দেশ ও একইভাবে বিশ্বের সেবা করতে প্রস্তুত। তবে তিন-চার বছরের এ যাত্রায় খেই হারিয়ে ফেলা অনেক সহজ, যার জন্য সারা জীবন ভুগতে হতে পারে। এ নবীনদের চোখে স্বপ্ন ও তাদের বুকে সাহস রয়েছে শুধু লাগবে একটু পথপ্রদর্শন। নবীনদের তাহলে কী করণীয়, যাতে সে সঠিক নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জন করবে, তাদের নিজস্ব পছন্দের জীবন অতিবাহিত করতে পারবে, পড়াশোনায় ক্রমাগত ভালো করতে পারবে এবং একইভাবে স্নাতকের পর চাকরির নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারবে?

অগ্রাধিকার নির্ধারণ করুন: বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নিয়মিত পড়াশোনা ও ভালো ফলাফলের বিকল্প নেই। তাই ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিতি, সমস্ত কুইজে অংশগ্রহণ, প্রয়োজনীয় দলগত কাজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত অধ্যয়নকে সবসময়ই গুরুত্ব দিতে হবে। সঙ্গে চাই নিয়মিত শিক্ষক ও অ্যাডভাইজারদের সঙ্গে আলাপ। 

অধিক খরচ করবেন না: বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক গ্রুপ আলোচনা ও বন্ধুদের সমাবেশ লোভনীয় লাগতেই পারে। তবে পিতা-মাতার নিয়ন্ত্রণ শিথিল হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী সামাজিকীকরণে খুব বেশি সময় ও অর্থ ব্যয় করতে শুরু করে এবং এভাবে মাত্রাতিরিক্ত শো-অফ করার প্রবণতা তৈরি হতে থাকে। বিষয়গুলো এড়াতে খাবার, বাসস্থান, পরিবহন ও অধ্যয়নসংক্রান্ত খরচসহ একটি মাসিক নির্দিষ্ট ব্যয় নির্ধারণ করুন এবং তারপর সামাজিকীকরণের জন্য একটি ছোট বাজেট ঠিক করুন, সেই সঙ্গে অভ্যাস করুন এর ওপরে খরচ না করতে। 

সময়সূচি বজায় রাখুন: প্রতিদিন গভীর রাতের অধ্যয়ন বা সন্ধ্যার আড্ডা অনেক লোভনীয় শোনায় ঠিকই, তবে এটি শরীরকে ক্লান্ত করে দেয়। গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা বা অ্যাসাইনমেন্টের ঠিক আগে তা স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। অতএব প্রতিটি কার্যকলাপের জন্য একটি নির্দিষ্ট টাইমলাইন সেট করুন এবং যতটা সম্ভব অনুসরণ করুন।

সম্ভাবনা খুঁজুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব প্রত্যেক নবীনকে একজন পূর্ণ নাগরিক ও সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। সুতরাং ক্লাব, ফোরাম, প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা, কর্মশালা ও দক্ষতা বিকাশের সেশনগুলোয় যোগ দিন, যা পড়াশোনার পরিধির বাইরেও পরিচিতি গড়ে তুলবে। প্রায়ই এটি পেশাদার জীবনে আরো সাহায্য করে, নেটওয়ার্ক তৈরির সুযোগ দেয় এবং সামগ্রিকভাবে পোর্টফোলিও বা সিভি সমৃদ্ধ করে। তবে এসব কার্যক্রমের বেলায় ভারসাম্য রাখতে হবে, যাতে অধ্যয়নের সময় নষ্ট না হয়।

সীমানা নির্ধারণ করুন: ‘না’ বলা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ফ্রেশারদের জন্য। অর্থ, সময়, ব্যক্তিগত মূল্যবোধ, নৈতিকতা সব দিক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রায়ই এমন পরিস্থিতি তৈরি করে, যেখানে নবীনদের জন্য ঠিক ও ভুল নির্বাচন করা কঠিন। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝিতে জড়িয়ে আসে ফলাফল খারাপ হওয়ার ঝুঁকি। তাই নিজস্ব সীমানা রক্ষার ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে হবে।

সুমাইয়া মতিয়াতুর: হেড অব স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

আরও