স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, জামায়াত-বিএনপি সুসংগঠিতভাবে কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ধ্বংস ও নৈরাজ্য চালিয়েছে। তারা স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, তারা জঙ্গির উত্থান ঘটিয়েছিল। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে তাদের উদ্দেশ্যই ছিল রাষ্ট্রকে অকার্যকর করা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল, এরপর সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট এবং ছররা গুলি মেরেছে। কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা আন্দোলনকারীদের বলেছে এগুলোতে কিছু হয় না, এগিয়ে চলো। একদম যুদ্ধক্ষেত্রের মতো অবস্থা হয়েছিল। তারা আন্দোলনের সামনে ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে এসেছিল। সহিংসতাকারী সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। মদদ ও উস্কানিদাতা এবং এটিকে নিয়ে যারা ফায়দা লুটতে চেয়েছে তাদের অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।
তিনি বলেন, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাড়ি ভাংচুর, গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। তাজহাট থানা, ডিসি ক্রাইম, ডিবি অফিস, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, মহানগর শ্রমিকলীগ অফিস এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিসে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমরা নানা আন্দোলনে ছিলাম। কখনো দলীয় অফিস, থানা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করিনি।
তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল সেতু ভবনে। সেখানে আগুন দেয়া হয়েছে। স্বপ্নের মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসের টোলপ্লাজায় আগুন দেয়া হয়েছে। আমি পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই তারা জীবন বাজি রেখে দেশরক্ষায় কাজ করেছে। আমরা সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি করব।
কারফিউ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ক্রমান্বয়ে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। প্রতিদিনই আলোচনা করে কারফিউ শিথিলের ব্যাপারে সময় বাড়ানো হচ্ছে। আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি, রংপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন, রংপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আসাদুজ্জামান, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন, ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান ও জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন, মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) ও ডিবি কার্যালয়, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস পরিদর্শন করেন।