লালমনিরহাট

কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিপাকে পড়েন অনেক এলাকার মানুষ। তবে রোববার দুপুর ১২টায় প্রধান প্রধান শহরগুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হয়েছে। সর্বত্র বৈদ্যুতিক সংযোগ সচল করার জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ ।

কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব ও শিলাবৃষ্টির কারণে লালমনিরহাটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।শনিবার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে লালমনিরহাট জেলাজুড়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে হাতিবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলায় কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী ও পাটগ্রাম উপজেলায় তুলনামূলক কম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবজি ক্ষেত লন্ডভন্ড ও বোরো ধানের ফুল ঝড়ে পড়ার কারণে ধান চিটা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে গাছপালা উপড়ে ঘরবাড়ি-স্কুল-কলেজের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিপাকে পড়েন অনেক এলাকার মানুষ। তবে রোববার দুপুর ১২টায় প্রধান প্রধান শহরগুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হয়েছে। সর্বত্র বৈদ্যুতিক সংযোগ সচল করার জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ ।

কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার এলাকার চাষী মো. আল আমিন বণিক বার্তাকে বলেন, হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে ধান ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের ফসল নষ্ট হওয়ার কারণে অনেক কৃষক পথে বসে যাবে। সার, বীজ ও কীটনাশক সবই নষ্ট হয়ে গেছে।

স্থানীয় এনজিওকর্মী আল আমিন আসাদ প্রধান বণিক বার্তাকে বলেন, পাটগ্রাম থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত মোটরসাইক যোগে মহাসড়ক দিয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সড়কের দুই ধারে যতদূর চোখ গেছে, দেখা গেছে শুধু কৃষকের বোরো ধান, ভূট্টা ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। কোথাও কোথাও বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মহাসড়কে যানজটও চোখে পড়েছে।

তিনি আরো বলেন, ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে অধিকাংশ এলাকার। যে কারণে ইজিবাইকে চার্জ দেয়া সম্ভব হয়নি। ফলে ইজিবাইকের চরম সংকট ও মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাকের তীব্র যানজটের কারণে এসএসসি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সড়কের ওপর থেকে গাছ-বাঁশ পরিষ্কার করে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও ছোট পরিবহনের সংকট কাটেনি।

হাতিবান্ধা উপজেলার পারুলিয়া তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের জ্যোতীশ চন্দ্র বর্মণ বণিক বার্তাকে বলেন, শনিবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের পাশের বিশাল একটি ‘শীল রেইনট্রি কড়াই’ গাছ ঝড়ে উপড়ে গিয়ে স্কুল ও কলেজ ভবনের ওপর পড়ে। এতে কলেজের টিনশেড বিল্ডিংটি ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। এটি মেরামত না করলে শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই।

বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন বণিক বার্তাকে বলেন, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে সবজি ক্ষেত এবং বোরো ধারসহ অন্যান্য ফসলের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরুপনের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা অফিসগুলো থেকে প্রতিবেদন পেলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ বলা যাবে। এজন্য সময়ের প্রয়োজন।

আরও