কুমিল্লায় স্ক্যাবিসের প্রকোপ, শিশুদের মধ্যে বেশি

স্ক্যাবিস একটি পরজীবীজনিত চর্মরোগ, যা সারকোপটিস স্ক্যাবিয়াই নামক পরজীবীর কারণে হয়ে থাকে।

কুমিল্লার বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ায় ছোঁয়াচে চর্মরোগ ‘স্ক্যাবিস’-এর প্রকোপ ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এ রোগে শিশুদের বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। গত বন্যার পরবর্তী সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে আক্রান্ত একজনের মাধ্যমে পরিবারের অন্য সদস্যরাও সংক্রমিত হচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

তারা বলছেন, ‘স্ক্যাবিসের সংক্রমণে আতঙ্কিত না হয়ে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে চিকিৎসা না নিলে কিডনি জটিলতা পর্যন্ত হতে পারে।’

গত বছর এই অঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। বন্যার পর দূষিত পানির প্রভাবে অস্বাভাবিক হারে চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। যদিও ‘স্ক্যাবিস’ আগে থেকেও ছিল, তবে বর্তমানে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের লাড়ুচৌ এলাকার জলিল জানান, তাঁর ২৩ মাস বয়সী মেয়ে আমেনার হাত ও শরীরে লাল লাল গোটা দেখা দেয়। একইভাবে ৬ বছর বয়সী মিথিলা জান্নাতকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসেন তাঁর মা রহিমা আক্তার। পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করেও আরোগ্য না পাওয়ায় তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছেন।

হাসপাতালে দেখা গেছে, অনেক শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি ‘স্ক্যাবিস’-এ আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। তাঁদের অভিভাবকরা বলছেন, শরীরের বিভিন্ন অংশে লাল রঙের র‍্যাশ উঠছে, এতে খুব চুলকানি হয়, বিশেষ করে রাতে। বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মালেকুল আফতাব ভূঁইয়া ‘বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বন্যা পরবর্তী সময়ে স্ক্যাবিসের প্রকোপ অনেক বেড়েছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু। সঠিক চিকিৎসা না হলে কিডনি জটিলতার আশঙ্কা থাকে। তাই পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যদেরও একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে।’

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শেখ হাসিবুর রেজা বলেন, ‘স্ক্যাবিস একটি পরজীবীজনিত চর্মরোগ, যা সারকোপটিস স্ক্যাবিয়াই নামক পরজীবীর কারণে হয়ে থাকে।’ কুমিল্লা সিভিল সার্জন আলি নুর মোহাম্মদ বশির আহমেদ বলেন, ‘এটি একটি খুবই ছোঁয়াচে রোগ। এই রোগ একজন থেকে আরেকজনের মাঝে ছড়ায়। কেউ সুস্থ হলেও, যদি আবার আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে, তবে পুনরায় সংক্রমিত হতে পারে। পরনের পোশাক গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এ রোগের চিকিৎসা রয়েছে এবং আমাদের জেলার সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ মজুত আছে।’

আরও