বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে রাজশাহীতে নিহত শিক্ষার্থী সাকিব আনজুমের মরদেহ ৭২ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৮টায় আদালতের নির্দেশে নগরীর টিকাপাড়া কবরস্থান থেকে মরদেহ তোলা হয়।
এ সময় রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অয়ন ফারহান শামস, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পুলিশ ও নিহতের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। মরদেহ উত্তোলনের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রাজশাহী নগর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান জানান, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ ও চিকিৎসক না পাওয়ার কারণে সাকিব আনজুমের মরদেহ সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা মরদেহ কবর থেকে তুলতে আদালতে আবেদন করেন। আদালত নির্দেশ দিলে বুধবার নিহতের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে রামেকে প্রেরণ করা হয়। বিকালে ময়নাতদন্ত শেষে একই কবরস্থানে আবার দাফন করা হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের সংঘর্ষের সময় শাহ মখদুম কলেজের পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাকিব আনজুম। তাকে দুই দফা গুলি করে হত্যা করা হয়।
নিহত সাকিবের বাড়ি নগরীর রাণীনগর এলাকায়। তিনি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
এজাহার সূত্রে আরো জানা গেছে, সাকিব আনজুম নিহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও ৪২ জনের নাম উল্লেখসহ মোট ৩৪২ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা মাইনুল হক। শুরুতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় মহানগর ডিবি পুলিশ।
রাজশাহী নগর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান জানান, এই মামলায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুবলীগ নেতার রুবেল সহ বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে ডাবলু সরকারকে ১৬ দিনের দুই দফা রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।