ভৈরব নদের তীরঘেঁষে গড়ে উঠেছে বাগেরহাট পৌরসভা। নয়টি ওয়ার্ডে হঁাড়িখালী, হরিণখানা, বাদিয়ার, নাগেরবাজার, ওয়াপদা ও বালিয়ার নামে পাঁচটি খাল রয়েছে। এসব খালে একসময় বড় বড় নৌকা চলাচল করত। তবে দখল-দূষণে এখন তা ভরাট হয়ে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কিছু স্থানে খাল দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে স্থাপনা।
পৌরসভার বাসিন্দারা বলছেন, নাব্য হারানো প্রবহমান খালগুলোয় জোয়ার-ভাটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দখল ও ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সেগুলো এখন মৃতপ্রায়। দখলমুক্ত ও পুনঃখননের দাবি তাদের।
পৌরবাসীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালীরা খাল দখল করে ভবন নির্মাণ করেছেন। খালে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমজুড়েই পৌরসভায় জলাবদ্ধতা থাকে। একবার বৃষ্টি হলে ১৫ দিন হাঁটুসমান পানি থাকে। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই।
শহরের বাসাবাটি এলাকার বিধান হালদার বলেন, ‘পৌরসভার ভেতর দিয়ে প্রবহমান খালগুলো দিয়ে একসময় বড় বড় নৌকা চলাচল করত। খালে গোসল ও সাঁতার কাটা যেত। এখন সেগুলো মৃতপ্রায়। খাল চেনার উপায় নেই। বর্ষা মৌসুমে পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের। দীর্ঘদিন ধরে এসব খাল সংস্কার করা হয় না।’
রেখা রানী বলেন, ‘কোথাও দখল হওয়ার কারণে আবার কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেলায় খালগুলো ভরাট হয়েছে। বর্ষায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানি জমে থাকে। খালগুলো দখলমুক্ত করে পুনঃখনন ও সংস্কার করা প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে বাগেরহাট পৌরসভার প্রশাসক মো. ফকরুল হাসান মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রিজভী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পৌরসভায় প্রায় এক লাখ মানুষের বসবাস। নয়টি ওয়ার্ডে পাঁচটি খাল রয়েছে। তবে তার বেশির ভাগই দখল হয়ে গেছে। খালের পাড়ে পাঁচ শতাধিক স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। আবর্জনার স্তূপ জমে খালগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ যে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। পাঁচটি খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৩ কিলোমিটার। সিটিসিএফটি প্রকল্পের মাধ্যমে কোস্টাল টাউনের ভেতরে খালগুলো খননের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। শিগগিরই দরপত্র আহ্বান করা হবে। খালগুলো সংস্কার করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে এনে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। প্রকল্পে সাড়ে ৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে পৌরবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে।’