যশোরের চার উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে পাঁচ হাজার ১১ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোমবার বিকালে কালবৈশাখীর সময় প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে বৃষ্টির সঙ্গে শিলা পড়ায় বোরোচাষীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এতে গাছ থেকে ধান পড়ে ‘ন্যাড়া’ হয়ে গেছে।
কৃষকরা জানান, ধান গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। আর খেতে কাটা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় দেনা পরিশোধ নিয়ে মহাচিন্তায় পড়েছেন তারা।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, পাঁচ হাজার ১১ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে আম, লিচু ও সবজিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে সরকারকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক খেতমজুর সংগ্রাম সমিতির যশোর জেলা শাখাসহ বাম সংগঠনের নেতারা। গতকাল যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে এ আহ্বান জানান তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, যশোরের ওপর দিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যে গত সোমবার বেলা ২টার দিকে আকাশ কালো মেঘে ঢাকা পড়ে। এরপর শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া। কিছুক্ষণের মধ্যেই কালবৈশাখীর সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। দীর্ঘ সময় ধরে শিলা পড়ার কারণে যশোরে বোরো মৌসুমে উঠতি ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চৌগাছা উপজেলায়।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সময়ে কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টি স্বাভাবিক। তবে এবার যশোরের চৌগাছা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের বলা হয়েছে, কেটে রাখা ধান দ্রুত খেত থেকে সরিয়ে নিতে এবং জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে।’ তিনি জানান, এ বছর যশোরে মোট ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৫১ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।
তার দেয়া তথ্যমতে, আধা ঘণ্টার শিলাবৃষ্টিতে ৫ হাজার ১১ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৪৩৪ হেক্টর জমির পাট, ১৩ হেক্টর জমির তিল, তিন হেক্টর জমির কলা, আট হেক্টর জমির মরিচ, ১৭ হেক্টর জমির আম নষ্ট হয়েছে।