ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দরের সঙ্গে আখাউড়া স্থলবন্দরের যোগাযোগ সহজ করতে নির্মাণ হচ্ছে চার লেন সড়ক। তিনটি প্যাকেজে ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। তবে সরকার পরিবর্তনের পর ১০ আগস্ট ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। চলতি মাসের প্রথম দিকে আবারো কাজে ফিরেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
ভারতীয় ঋণ সহায়তা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ৩০ জুন। শুরু থেকে বিভিন্ন কারণে প্রকল্পের কাজ পিছিয়েছে। সব মিলিয়ে ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ করতে প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক দফা বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির ভারতীয় ঠিাকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফিরতে শুরু করেছেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে মহাসড়কটির বেহাল অংশের সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া মহাসড়কের ঘাটুরা এলাকার সেতু নির্মাণকাজও চলছে।
চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, নতুন করে প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে জনবল নিয়োগ এবং প্রকল্পকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ মেরামত করবে বলে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়। যন্ত্রপাতিগুলো এতদিন অব্যবহৃত পড়েছিল। বেশির ভাগ যন্ত্রাংশ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। কাজ শুরু হওয়ার আগে জনবল নিয়োগ ও যন্ত্রাংশ কার্যকর করার বিষয়গুলো দ্রুত শেষ করার কথা বলা হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে ভারতীয় নমনীয় ঋণ সহায়তার (এলওসি-২) মাধ্যমে। সব মিলিয়ে প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে ভারত। বাকি অর্থের জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। তৃতীয় প্যাকেজে নির্মাণ করা হবে ধরখার-আখাউড়া অংশ। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ অংশের দরপত্র প্রক্রিয়া চলমান। একই প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে আরেকটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান। ভারতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রিটেসের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশের মডার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্ল্যানার্স অ্যান্ড কনসালট্যান্টস। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর পেছনে খরচ হচ্ছে আরো ১১৭ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এরই মধ্যে ৩০ জন ভারতীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকল্প এলাকায় ফিরেছেন। আপাতত সংস্কারকাজ চলছে। এটি শেষ করে পাথরসহ অন্যান্য উপকরণ আমদানির পর মহাসড়কের অবশিষ্ট অংশের নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু হবে। সেক্ষেত্রে প্রকল্পের মেয়াদ আরো বাড়ানো হতে পারে।’