দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যগুলোর মধ্যে ফল ও সবজিতে কীটনাশকের ব্যবহারের হার বেশি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন। তিনি বলেন, দেশের কৃষক শ্রেণি কীটনাশক ব্যবহারে সাধারণত নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে না। ফলে দেখা যায় খাদ্যপণ্যের মধ্যে শাক-সবজি ও ফলে কীটনাশকের উপস্থিতি বেশি পাওয়া যাচ্ছে। দেশে উৎপাদিত কোন খাদ্য কতটুকু নিরাপদ তা জানা যায় না। তবে আমার প্রত্যাশা হচ্ছে, সব ধরনের খাবারই নিরাপদ থাকতে হবে।
আজ সোমবার (৩০) রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) কার্যালয়ে কর্তৃপক্ষের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএফএসএর চেয়ারম্যান জাকারিয়া এই সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন। উপস্থিত ছিলেন বিএফএসএর সদস্য মাহমুদুল কবির মুরাদ ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ।
প্রবন্ধে ড. রুহুল আমিন বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি গোল ২ এ খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাবারের ব্যাপারে বলা হয়েছে। তিনি দেশের মানুষের খাদ্যে ফল গ্রহণ সম্পর্কে বলেন, গ্রামের মানুষ ২৩.৮ ও শহরে ৩৮ শতাংশ ফল খেয়ে থাকে। এটি বিভাগীয়ভাবে গ্রহণের ক্ষেত্রে বরিশালে ৪০.২, চট্টগ্রামে ১৭.৩, ঢাকায় ২৬.৫, খুলনায় ২৬.২, ময়মনসিংহে ৩৫.৮, ৪৮.৯, রংপুরে ৬০.১ ও সিলেটে ৪৫.৭ শতাংশ।
গ্রামের ১৫.৭ এবং শহুরে ৩৩.১ শতাংশ মানুষ গরুর মাংস ও পোলট্রি মাংস গ্রহণ করে। ডিম গ্রহণে গ্রামের মানুষ ১০.১, শহুরে ১৮.৯ শতাংশ। তা ছাড়া দেশে ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বেড়েছে। সেখানে ধনীদের এটি গ্রহণের হার ৭ শতাংশ ও গরিব মানুষের খাদ্য গ্রহণের হার মাত্র ২ শতাংশ।
ফুড সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদেশে রফতানি করতে হলে নিরাপদ খাদ্য রফতানি করতে হবে। তা না হলে বিদেশীরা আমাদের পণ্য কিনবে না।
তিনি বলেন, তিনভাগে খাদ্য নিরাপত্তা নির্ভর করে। তার মধ্যে রয়েছে— পাবলিক ফুড সেফটি, থার্ড পার্টি ও ন্যাশনাল পর্যায়ে।
দেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের হার কতটুকু— এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন খাদ্য কতটুকু নিরাপদ তা জানা যায় না। তবে ফল ও সবজিতে কীটনাশকের ব্যবহার বেশি।
কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে জাকারিয়া বলেন, সবজিতে কীটনাশক সরাতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে কিছুটা কমে। বেশি অনিরাপদ বা ক্ষতিকারক খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন কলিজা জাতীয় খাবার। এ খাবার পরিমাণে কম খেতে হবে।
অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খোলাবাজারে পণ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা কঠিন। কেননা এটা তারা উৎপাদন করে না। তবে রেস্টুরেন্টে ভেজাল খাবার দেয় কিনা তা আমরা ধরে থাকি। আর ভেজাল পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ কাউকে ছাড় দেয় না। তা ছাড়া রেস্টুরেন্ট বন্ধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই, তা আদালতের ওপর নির্ভর করতে হয়।