ফরিদপুরে
অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে পদ্মা নদীপাড়ের ১০টি গ্রাম। সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ও নর্থ চ্যানেল
ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে বালি উত্তোলনের খবর পাওয়া গেছে।
নদীপাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, বছরের পর বছর অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলনের কারণে নদী ভেঙে কয়েক কিলোমিটার অভ্যন্তরে চলে এসেছে। নদীভাঙনে এরই মধ্যে তিনটি গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। আরো ১০টি গ্রামের অনেকটাই ভেঙে গেছে। দিনের বেলা আনাগোনা না থাকলেও রাত হলেও শুরু হয় পদ্মা নদী থেকে বালি উত্তোলন। ফরিদপুর নদীবন্দরের কয়েকশ মিটারের মধ্য থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বন্দরটিও। অন্য প্রান্তের আইজদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী গ্রামসহ অন্তত চার-পাঁচটি গ্রামের ফসলি জমি ভেঙে যাচ্ছে। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রম কিছুটা শিথিল থাকার সুযোগে মরিয়া হয়ে উঠেছে বালি ব্যবসায়ীরা। এ সুযোগ কাজে লাগাতে তারা বিভিন্ন জেলা থেকে ড্রেজার ভাড়া করে এনে বালি উত্তোলন করছে। মো. আলম শেখ নামে এক ব্যক্তি নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীতে নির্মিত সেতুসংলগ্ন এলাকায় বালি উত্তোলন করছেন। এতে সেতুটিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী গ্রামের আব্দুর রব ও মো. রনিসহ কয়েকজন জানান, মো. মজিবর শেখ, মো. আলম শেখ, মো. মোফাজ্জেল হোসেন ও মো. আনোয়ার হোসেন আবু ফকিরের নেতৃত্বে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায়, কেউ বালি উত্তোলনের বিষয়ে কথা বললে হেনস্তার শিকার হতে হয়। এসব কারণে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। তারা দাবি করেন, রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
আলম শেখ জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ফরিদপুর নদীবন্দর এলাকায় বালি খালাসের অনুমতি দিয়েছে। বালুমহাল থেকে বালি এনে সেখানে খালাস করা হচ্ছে। তবে বন্দর ও আশপাশের এলাকা থেকে বালি উত্তোলনের বিষয়টি সঠিক নয়।’
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়। স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ না থাকায় কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা নিশ্চত হওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে সরাসরি কারো বিরুদ্ধে মামলাও করা যাচ্ছে না।’