বাগেরহাটের
কচুয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। বেরিয়ে গেছে বিমের রড। বর্ষার পানিতে গুরুত্বপূর্ণ দলিল ও নথিপত্র নষ্ট
হওয়ার উপক্রম। ১১ বছর আগে
পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও নতুন করে ভবন নির্মাণ করা হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও জরাজীর্ণ ভবনে কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা গেছে, অফিসে প্রতিদিন কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ জমিসংক্রান্ত কাজে দুই শতাধিক মানুষ আসা-যাওয়া করে। ভবনটির দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদের বিমেও ফাটল ধরেছে। সিলিং ফ্যানের হুকগুলো মরিচা ধরে নষ্ট হয়েছে। ভবনের অনেক স্থানে মেঝের ঢালাই উঠে গেছে। বিদ্যুৎ লাইনও ঝুঁকিপূর্ণ। বৃষ্টি শুরু হলে টেবিলের ওপর পলিথিন দিয়ে রক্ষা করা হয় প্রয়োজনীয় দলিল-দস্তাবেজ।
রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী মো. আসাদুজ্জামান জানান, বৃষ্টির পানি থেকে কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রক্ষার জন্য ভবনের ভেতরের অংশের ছাদে ও ফাইলের ওপর পলিথিন দিয়ে রাখা হয়। ভবনের চারপাশে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। সংস্কারের অভাবে ভবনটি এখন ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কার্যালয়ে প্রবেশের সড়কটিও ডুবে যায়।
নকল নবিশ শিল্পী রানী সাহা বলেন, ‘বৃষ্টি হলে ভবনের ছাদ চুঁইয়ে মেঝেতে পানি জমে যায়। আর মাথার ওপর পলিথিন তো থাকেই। অনেক সময় অফিসের কাগজ রক্ষা করতে গিয়ে নিজেরাই ভিজে যাই। কিছু দিন আগে পলেস্তারা খসে পড়ে আমাদের এক সহকর্মী আহত হয়েছেন।’
শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নয়, ভয়ে থাকেন সেবাপ্রত্যাশীরাও। কচুয়া উপজেলার খলিসাখালী ইউনিয়নের সালমা বেগম বলেন, ‘জমি ক্রয়ের দলিল করতে রেজিস্ট্রি অফিসে আসতে হয়। ভবনের ভেতরে বেশিক্ষণ থাকলে ভয় লাগে। অনেক দিন ধরে রেজিস্ট্রি অফিসের এ অবস্থা। দেখে মনে হয় এই বুঝি ভেঙে পড়ল।’
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারি রেকর্ড সংরক্ষণের জনস্বার্থে অফিসটি স্থানান্তর করা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ রেজিস্ট্রি অফিস ভবনটিতে সেবাগ্রহীতা, দলিল লেখক কিংবা অফিস স্টাফদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। জরাজীর্ণ ও স্যাঁতসেঁতে কোর্ট ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়ায় সবাইকে আতংকে থাকতে হয়।
তবে ভবনটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কচুয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার তুপা বসু। তিনি বলেন, ‘পরিত্যক্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনটিতে আমরা ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদানের পর থেকে জেলা রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে জেলা রেজিস্ট্রার মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘জেলার প্রায় সব উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এ বিষয়টি সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করি এ সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।’