কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলার এইচ আর হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ইসরাত জাহান এরিন (১৯) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরিবারের অভিযোগ, সিজারিয়ান অপারেশনের সময় ডা. মারজান সুলতানা নিঝুম প্রসূতির নাড়ি কেটে ফেলেন। ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এরিনের মৃত্যু হয়।
নিহত ইসরাত জাহান এরিন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলি ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের মেয়ে। বছরখানেক আগে তার বিয়ে হয় ভুবনঘর গ্রামের ব্যাংক কর্মকর্তা দিদার হোসেনের সঙ্গে। এটি ছিল তাদের প্রথম সন্তান। এদিকে নবজাতক সুস্থ থাকলেও এরিনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
এরিনের বাবা মোবারক হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এইচ আর হাসপাতালে ডা. নিঝুম তার মেয়ের সিজার করেন। শুক্রবার দুপুরে এরিনের অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক আইসিইউতে নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে কুমিল্লার মুন হাসপাতালে নিয়ে গেলে আলট্রাসনোগ্রাফিতে পেটে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ধরা পড়ে। ততক্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু ঘটে।
মোবারক হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর ১২ টায় আমার মেয়ে এরিন জানায় যে তার শরীর খারাপ লাগছে। তখন ডিউটি ডাক্তার বললেন, এরিন অক্সিজেন নিচ্ছিল না, পালস পাওয়া যাচ্ছিল না, আইসিইউতে নিতে হবে। তখন আমরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মুন হাসপাতালে নিয়ে যাই। মুন হাসপাতালে অপারেশন করে তার পেট থেকে জমাট বাঁধা রক্ত বের করা হয়। সেখানে পাঁচ ব্যাগ রক্ত দেয়ার পরও আমার মেয়েকে বাঁচানো যায়নি। তারা আমার মেয়ের নাড়ি কেটে ফেলেছে। আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সময় পার করেছে। তাদের ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করছি আমি।’
এরিনের চাচা মো. আলম জানিয়েছেন, তাদের পরিবার আইনের আশ্রয় নেবে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মারজান সুলতানা নিঝুমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার জানান, এ ধরনের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। আমরা একটি তদন্ত দল পাঠিয়েছি এবং নিজেরাও তদন্ত করছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।