বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বাগেরহাটের উপকূলজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় ভারি বৃষ্টিপাতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জলবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাট পৌর শহরের বেশিরভাগ এলাকার অলিগলি পানিতে তলিয়ে গেছে। বিড়ম্বনায় পড়েছে শহরে বসবাসকারীরা। জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ম আয়ের মানুষ। অন্যদিকে টানা বৃষ্টিতে জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও কচুয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানিতে অনেকের মাছের ঘের ডুবে ভেসে গেছে মাছ। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাত থেকে লাগাতার বৃষ্টিতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার
(১৫ সেপ্টেম্বর)
দুপুরে বাগেরহাট শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল
রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই
মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল
মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে,
বাসাবাটি, মিঠাপুকুরপাড় মোড়, পৌরসভার পাশে,
জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও
শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে।
সড়কে পানি জমে থাকায়
ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।
এদিকে
বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে
রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও কচুয়ার বেশকিছু
এলাকায় মাছের ঘের ডুবে মাছ বের
হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃষ্টি আরো দু-একদিন
স্থায়ী হলে এসব এলাকার
বেশিরভাগ ঘের ডুবে যাবে
বলে দাবি মাছ চাষীদের।বাগেরহাট
মিঠাপুকুরে খাল-বিলের কচুরিপানা ভেসে আসছে পাকা
সড়কে ও
বাসাবাড়িতে ।
তরিকুল
ইসলাম নামের এক ওষুধ বিক্রয়
প্রতিনিধি বলেন, লাগাতার বৃষ্টিতে পৌরশহরের প্রায় সকল অলিগলি পানিতে
তলিয়ে গেছে। তবে পানি নিষ্কাশনের
কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা
মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
আমলাপাড়ার
সড়কের বাসিন্দা এক গৃহবধূ জানান,
বসত ঘরে পানি উঠে যাওয়ায়
শনিবার রাতে রান্নাবান্না বন্ধ
থাকায় শুকনা খাবার খেতে হয়েছে। এখন
বাবার বাড়ি যাচ্ছি, এখানে
থাকার পরিবেশ নেই।
বাগেরহাট
শহরের রিকশা চালক রবিউল ইসলাম
বলেন, দুই দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে
খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। সকাল
থেকে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার পরেও বাধ্য হয়ে
রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। রাস্তাঘাটগুলো
গর্ত হয়ে গেছে ,পানিতে
পাকা সড়কে গর্ত দেখা
যায় না। তারপরও পেটের
তাগিতে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি।
বাগেরহাট
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ
আল বিরুনী বলেন, পশুর নদীর পানি
বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত
হচ্ছে। এভাবে যাদি বৃষ্টি অব্যাহত
থাক তাহলে নদীর পানি আরো
বাড়তে পারে।