রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ

সারা দেশের মতো রাজশাহীতেও অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়েছে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা।

সারা দেশের মতো রাজশাহীতেও অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়েছে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা। শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) মেইন গেটে এ আন্দোলনে যোগ দিতে থাকে রাজশাহীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ শিক্ষক, অভিভাবক, আইনজীবী এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।


তবে আন্দোলনে যোগ দিতে বেগ পেতে হয়েছে অনেকেরই। পথে পথে চেকপোস্টসহ নজরদারি বসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবুও বিভিন্ন বাঁধা পেরিয়ে তালাইমারি মোড়ের রুয়েট গেটে প্রায় তিন হাজার আন্দোলনকারী জড়ো হয়। এরপর বেলা ১১টায় শুরু হয় গণমিছিল ও বিক্ষোভ। গণমিছিলে ছাত্র হত্যা, হামলার প্রতিবাদ ও নয় দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তালাইমারি মোড়ে অবস্থানরত পুলিশবক্স, পুলিশবক্সের চৌরাস্তার মিনারে থাকা দুটি নৌকা (কাঠ-কাপড়ের তৈরি) ও রুয়েটের প্রাচীর সংলগ্ন সাঁটানো আওয়ামী লীগের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।


এ সময় ‘এক দুই তিন চার, স্বৈরাচার তুই গদি ছাড়’, ‘শিবির ট্যাগের ছলচাতুরী, বুইঝা গেছে জনগণ’, ‘এক দফা, এক দাবি, স্বৈরাচারের পদত্যাগ’, ‘নয় ছয় বুঝিনা, কবে যাবি হাসিনা’, ‘আবু সাঈদ মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘লাশের ভেতর প্রাণ দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’- এমন স্লোগান দিতে দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।


এছাড়াও রেলগেট শহীদ কামারুজ্জামান হেনার স্মৃতিসৌধের পাশে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানালে তাদেরকেধাওয়া করে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ টিয়ারশেল, লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট ছুড়লে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা স্থান ত্যাগ করে।


আন্দোলনরত রুয়েট শিক্ষার্থী তানভির হাসান বণিক বার্তাকে বলেন, সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে আজ আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি। এখানে আমাদের একটাই দাবি স্বৈরাচার সরকারের পদত্যাগ। সরকারের পদত্যাগ ছাড়া শিক্ষার্থী সমাজ ঘরে ফিরবে না। এ আন্দোলন আর কোটা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। পুলিশ প্রশাসন আমাদের ভাইদের ওপর গুলিয়ে চালিয়েছে, তাদের বলব এখন সাবধান হন। আপনাদেরও ছেলেমেয়ে আছে, তাদের দিকে তাকান।


এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আমরা তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছি। আর কত ঘরে বসে আমার ছেলেদের রক্ত দেখব। শিক্ষার্থীদের গায়ে গুলি করতে স্বৈরাচার সরকারের কি একটুও বুক কাঁপেনি? আজ থেকে এ আন্দোলনে গুলি চালালে সেই গুলি আগে শিক্ষকদের গায়ে লাগবে।

আরও