গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর পুলিশ ও সাহেবগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ দুই পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে নয় পুলিশ সদস্য তীরবিদ্ধ ও চার সাঁওতাল গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিন সাঁওতাল শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ মারা যান। এর পর থেকে ৬ নভেম্বর সাঁওতাল হত্যা দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল গাইবান্ধায় সমাবেশ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। সকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামে অস্থায়ী শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। পরে মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে সাঁওতালরা জাতীয় ও কালো পতাকা, তীর-ধনুক, বাদ্যযন্ত্র, বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুনসহ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গাইবান্ধা শহরে আসে। দীর্ঘ আট বছরেও সাঁওতাল হত্যার বিচার না হওয়ায় সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা।
সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ ও জনউদ্যোগ গাইবান্ধা যৌথভাবে এসব কর্মসূচি পালন করে।
বক্তারা বলেন, ‘২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরের ঘটনায় আহতরা উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে কেউ পঙ্গু হয়েছেন, কেউ গুলিবিদ্ধ হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। ঘটনার পর তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাসের বাণী শোনালেও তার কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি।’ সাঁওতাল হত্যার বিচার, আসামিদের গ্রেফতার, বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ক্ষতিপূরণ ও তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানান বক্তারা।
তারা বলেন, ‘শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ হত্যাকাণ্ডের পর থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। কিন্তু বিচার হওয়া তো দূরের কথা, মামলার আসামি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল ইসলাম বুলবুলসহ অন্যান্য আসামির কেউই গ্রেফতার হননি।’