ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুটসহ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। গতকাল দুপুরে সংগঠনটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতারা। তারা অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো ভ্যাট প্রত্যাহার না করলে প্রয়োজনে রাজপথে আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক তানভিরুল ইসলাম সোহান বলেন, ‘সরকার রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটি অধ্যাদেশ জারি করেছে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি ও ব্যবসার খরচ বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার রাজস্ব বাড়ানোর জন্য করের আওতা বাড়াবে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে যে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় এবং তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।’
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘গত অবৈধ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই ভঙ্গুর এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। এ অবস্থায় গত সরকার আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যেকোনো দেশের জন্য আইএমএফের ঋণ হলো ঋণপ্রাপ্তির সর্বশেষ আশ্রয়। এ কঠিন ঋণের শর্ত পালনের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি শতাধিক পণ্যের শুল্ক বৃদ্ধির অধ্যাদেশগুলো জারি করেছে। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকারের কাছে প্রশ্ন, অবৈধ সরকারের ঋণের এ শর্ত বর্তমান সরকার পুনর্বিবেচনার জন্য আইএমএফকে আহ্বান জানিয়েছে কি? তা স্পষ্ট নয়। গণ-অভ্যুত্থানে সৃষ্ট সরকার একটি অবৈধ সরকারের চুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াতে পারে না। অবিলম্বে শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন যশোর চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সুজা, জাহিদ হাসান টুকুন, যুগ্ম সম্পাদক এজাজ উদ্দিন টিপু, কোষাধ্যক্ষ শাহজাহান আলী খোকন, নির্বাহী সদস্য গোলাম রেজা দুলু প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের অর্থনীতি জনকল্যাণমুখী হয়ে ওঠার প্রত্যাশা তীব্রতর হয়ে ওঠে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অনেকটাই গণবিরোধী। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এটি পরিবর্তনের সুযোগ ছিল। কিন্তু এখনো আগের সরকারের প্রণীত বাজেটই বহাল রয়ে গেছে। একইভাবে বহাল রয়েছে গত সরকারের গৃহীত রাজস্ব ও মুদ্রানীতিও। দেশের অর্থনীতি এখনো চলছে আইএমএফের দর্শনে। সম্প্রতি বাজেট সংশোধনের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাতে এর আকার কমবে সামান্যই। বরং সামনের অর্থবছরে তা আরো বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।