নিষেধাজ্ঞা শেষে রোববার উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন

মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় গত ১ জুন থেকে সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ।

মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় গত ১ জুন থেকে সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। টানা তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আগামী রোববার থেকে বনজীবী ও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন। দীর্ঘ বিরতির পর সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন খুলনার সুন্দরবনসংলগ্ন বনজীবীরা। 

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনে সম্পদ আহরণে ১২ হাজার নৌকা ও ট্রলারকে বোর্ড লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) দেয়া হয়। এসব নৌযানের মাধ্যমে প্রতি বছর এক-দেড় লাখ জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়াল সুন্দরবনে সম্পদ আহরণ করেন।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘সুন্দরবন শুধু জীববৈচিত্র্য নয়, মৎস্য সম্পদেরও আধার। জুন-আগস্ট মাছের প্রজনন মৌসুম। এ সময় সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ কারণে ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য জেলে ও পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে প্রবেশে পাস দেয়া হবে। নির্ধারিত ফরেস্ট স্টেশনগুলোকে এ বিষয়ে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। অনুমতিপত্রের মেয়াদ অনুযায়ী সুন্দরবনে অবস্থানকারী জেলেদের তালিকা বনরক্ষীদের ক্যাম্প কর্মকর্তার কাছেও থাকবে। বনরক্ষীরা তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি খালে টহল দিয়ে অনুমোদন পাওয়া জেলের নৌকা যাচাই করে দেখবেন।’

তবে সাধারণ জেলে ও বাওয়ালিদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার সময়ে সুন্দরবনে অপরাধ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। বনসংলগ্ন এলাকার জেলেরা বিষ প্রয়োগে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করেন। বনের ভেতরে গাছ পুড়িয়ে চলে শুঁটকি তৈরি। দেশ-বিদেশের বাজারে ওই চিংড়ির শুঁটকির চাহিদা ও দাম বেশি। মাছ ও কাঁকড়া সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার আড়ত ও বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হয়। এতে প্রকৃত জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অপরাধীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা। 

এ প্রসঙ্গে বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময়ে সুন্দরবনকেন্দ্রিক সব ধরনের অপরাধ দমনে সচেষ্ট থাকেন বনরক্ষীরা। তবে এর মধ্যে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। দায়িত্ব পালনে বনরক্ষীদের কারও বিরুদ্ধে অবহেলা অথবা অপরাধীর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও