মুন্সিগঞ্জে শীত মৌসুমে ১ লাখ টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্য

শীতকালীন সবজির চারা উৎপাদনে সুনাম রয়েছে মুন্সিগঞ্জের। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয় সবজির চারা।

শীতকালীন সবজির চারা উৎপাদনে সুনাম রয়েছে মুন্সিগঞ্জের। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয় সবজির চারা। সাধারণত নভেম্বরের মাঝামাঝিতে বীজতলা প্রস্তুত করেন কৃষক। জানুয়ারি পর্যন্ত চলে চারা উৎপাদন। শীত মৌসুমে ৪ হাজার ৯০৭ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৪২৩ টন।

সরজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার রামপাল, পঞ্চসার ও বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বীজতলা প্রস্তুত করছেন কৃষক। রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষায় বীজতলা ঢেকে রাখছেন বিশেষভাবে তৈরি মাচায়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মাচা দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন বীজতলা। পরদিন সকালে রোদ উঠলে মাচা সরিয়ে নেন। দুপুরে রোদের প্রখরতা বাড়লে আবার মাচায় ঢেকে দিচ্ছেন। ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, টমেটো, ব্রোকলি, কুমড়া, বেগুনসব বিভিন্ন ধরনের সবজির চারা উৎপাদন করেন এখানকার কৃষক। বীজ বপণের ২৫ দিনের ব্যবধানেই চারা বিক্রি করেন। প্রতি মৌসুমে ৩-৪ কোটি টাকার সবজি বিক্রি হয়।

সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বণিক্যপাড়া গ্রামের কৃষক গণি মাতবর বলেন, ‘২৫ বছর ধরে সবজির চারা উৎপাদন করছি। এখানকার চারা উৎকৃষ্ট মানের। বিভিন্ন জেলার কৃষকের কাছে চাহিদাও বেশি। তাই কখনো বীজতলা করে লোকসান হয়নি।’

একই ইউনিয়নের পঞ্চসার গ্রামের রমিজ দেওয়ান জানান, তিনি অক্টোবরের মাঝামাঝিতে ৫০ শতাংশ জমিতে ফুলকপি ও বাঁধা কপির বীজতলা করেছেন। প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ পড়েছে তার। এরই মধ্যে চারা উত্তোলন করে বিক্রিও করেছেন। আরো তিনবার চারা করা যাবে। সব খরচ বাদে প্রায় ৫ লাখ টাকা লাভ হবে বলে প্রত্যাশা তার।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, শীতকালীন সবজি চারা উৎপাদন লাভজনক পেশা। এখানকার বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষক বীজতলায় চারা উৎপাদন পেশা হিসেবে নিয়েছেন। চারা উৎপাদনে জৈবসার ও খৈল ব্যবহার হয়। এ কারণে এখানকার চারার গুণগত মান ভালো। স্থানীয় কৃষকের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এখানকার সবজি চারা ঢাকার কেরানীগঞ্জ, সাভার, মানিকগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। এরই মধ্যে শীতকালীন সবজি আবাদ শুরু হয়ে গেছে।

আরও