ফাঁকা থাকছে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি

বৈদেশিক বাণিজ্যের গতি মন্থর হয়ে আসায় চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমে এর প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় দেশের প্রধান এ বন্দরে কমে গেছে জাহাজ আসার সংখ্যা। গত ডিসেম্বরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি কমেছে ২০ শতাংশেরও বেশি। ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেয়ায়

বৈদেশিক বাণিজ্যের গতি মন্থর হয়ে আসায় চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমে এর প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় দেশের প্রধান বন্দরে কমে গেছে জাহাজ আসার সংখ্যা। গত ডিসেম্বরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি কমেছে ২০ শতাংশেরও বেশি। ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেয়ায় প্রতিনিয়তই ফাঁকা থাকছে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি।

জাহাজ আসার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা ১৮টি জেটির মধ্যে গত এক সপ্তাহে দিনে তিনটি, চারটি এমনকি সাতটিরও বেশি খালি ছিল। খাদ্যশস্যের জন্য প্রস্তুত হওয়া পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের (পিসিটি) তিনটি বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) দুটি জেটিও থাকছে জাহাজশূন্য। অথচ একটা সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে জেটিতে ভিড়তে দুই সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় বহির্নোঙরে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে জাহাজের নাবিককে। মূলত বৈদেশিক বাণিজ্যের গতি মন্থর হওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। 

বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বণিক বার্তাকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারবাহী জাহাজ ভেড়ানোর জন্য এখন অপেক্ষা বলে কিছু নেই। খালি জেটি নিয়ে বসে আছি বন্দর ব্যবহারকারীদের সেবা নিশ্চিত করতে। বহির্নোঙরে অপেক্ষা ছাড়াই জেটিতে জাহাজ ভিড়ছে। সম্প্রসারণ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনে অপারেশনাল কার্যক্রমে গতি এনেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী কনটেইনারের ৯৮ শতাংশই আনা-নেয়া হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। এর উল্লেখযোগ্য অংশই শিল্পপণ্য। বাংলাদেশ ব্যাংক বিলাসপণ্য জরুরি নয় এমন পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে। যদিও ডলার সংকটে জরুরি পণ্য আনতেও ঋণপত্র খুলতে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তাতে গত অক্টোবর থেকে ঋণপত্র খোলা কমতে শুরু করলেও চট্টগ্রাম বন্দরে এর প্রভাব ভালোভাবে পড়তে শুরু করেছে ডিসেম্বর থেকে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের আমদানি তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গত ডিসেম্বরে বাণিজ্যিকভাবে পণ্য আমদানি হয়েছে ৬৫ লাখ ৯৩ হাজার টন, যেখানে ২০২১ সালের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৮২ লাখ ৮৫ হাজার টন। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে আমদানি কমেছে ২০ দশমিক ৪২ শতাংশ। 

এইচএম স্টিল গোল্ডেন ইস্পাত লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ সরওয়ার আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ঋণপত্র খুলতে না পারায় ইস্পাতের কাঁচামাল আমদানিতে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার সুবিধা কাজে লাগাতে পারিনি। ঋণপত্রই যদি খোলা না যায় তাহলে কম দামে আমদানির সুফল ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানোর সুযোগ নেই।  

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ঋণপত্র খোলার হার কমার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এখন। আমদানি দায় মেটানোর সক্ষমতা কমে যাওয়ায় কম প্রয়োজনীয় পণ্যে কড়াকড়ি রাখলেও খাদ্যপণ্যসহ শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে সবসময় অগ্রাধিকার রাখতে হবে।

আরও