পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে সংসদে আইন পাস
করার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ৩ ঘণ্টার অবরোধ পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের
(জাবি) শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে একটি মিছিল নিয়ে মহাসড়কে
অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশ বাধা দিলেও
তা উপেক্ষা করে মহাসড়কে উপস্থিত হন তারা।
পুলিশের বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা জানান, ‘পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী
বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ পালন করার কথা। এ কর্মসূচি পালন করেই ঘরে
ফিরবেন তারা।’ শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান দেখে পিছু হটে পূর্বে থেকে প্রস্তুত রাখা
একটি এপিসি কার। তবে অবরোধ চলাকালে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। আজকের কর্মসূচিতে
অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি
এড়াতে সতর্ক ছিলেন শিক্ষার্থীরাও।
আন্দোলনে অংশ নিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম
বলেন, আমরা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে সংসদে আইন পাস করার এক দফা নিয়ে শান্তিপূর্ণ
কর্মসূচি পালন করে আসছি। আজও বিকাল ৩টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন
করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা এসে দেখলাম মহাসড়কে পুলিশ, সাঁজোয়া যান আর বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রধান ফটক অবরুদ্ধ। এসব উপেক্ষা করে অবরোধ পালন করেছি। সবার স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণেই
এটা সম্ভব হয়েছে। দাবি আদায়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত আছি।
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, আন্দোলনের
শুরু ও শেষ আপনারা দেখেছেন। আমাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল। এক দফা আদায় না করা পর্যন্ত
এ ধরণের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলবে। কোনো বাধা আমাদের আটকে রাখতে পারবে না।
নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, কুমিল্লা
ইউনিভার্সিটিসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ আজকে হামলা করেছে। আজকে আমাদের
এখানেও পুলিশ হাজির হয়েছিল, তারা ভেবেছিল তাদের দেখে আমরা আন্দোলনে নামব না, কিন্তু
শিক্ষার্থীরা আরো দুর্বার গতিতে আন্দোলনে হাজির হয়েছে।
তিনি বলেন, পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সরে এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের
ওপর হামলা চালাচ্ছে, তাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই আমাদের ওপর কোনো প্রকার হামলা চালালে
আমরা বসে থাকব না। আমরা আমাদের দাবি আদায় করে তবেই ঘরে ফিরব।
ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অপস অ্যান্ড ট্রাফিক)
আব্দুলাহিল কাফি বণিক বার্তাকে বলেন, এ মহাসড়ক অবরোধ করলে অসুস্থ মানুষ, রোগী ছাড়াও
উত্তরবঙ্গগামী মানুষের ব্যাপক ভোগান্তি হয়। এসব ভোগন্তি এড়াতে মহাসড়ক অবরোধ না করার
জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা তা রাখেন নাই। তবে আমাদের দায়িত্ব
পালনে আমরা সচেতন ছিলাম।
এর আগে বুধবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের
দেয়া আদেশের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেন। এ আদেশের পরও আইন পাসের মতো নির্দেশনা
না পেলে কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।