কুষ্টিয়ায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জামায়াত আয়োজিত একটি জনসভায় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় এক জামায়াত কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত জামায়াত কর্মীর নাম খোকন (৩৪)। তার বাড়ি মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুড়াপাড়া গ্রামে। ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। খোকন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রোববার বেলা ৩টার দিকে বুড়াপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুড়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে কিছুদিন ধরে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল ও স্থানীয় বিএনপি কর্মী রাশেদ মাহমুদ নাসিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। তারা দুজনই কমিটির আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন। অ্যাডহক কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিতে জামায়াতের মুকুলকে চাপ সৃষ্টি করছিলেন বিএনপির নাসির। এ নিয়ে শনিবার রাতে মুকুলকে হুমকি দেন নাসির। হুমকির প্রতিবাদে রোববার বেলা ৩টার দিকে বুড়াপাড়া স্কুল মাঠে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে স্থানীয় জামায়াত ইসলামীর স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা সেখানে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও উত্তেজনা শুরু হওয়ার এক পর্যায়ে বিএনপির কর্মীরা জামায়াতের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। এতে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের উদ্ধার করে আটজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ১২ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মিরপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, ‘নাসির একসময় ছাত্রদল নেতা ছিলেন। এখন তিনি বিএনপির কর্মী।’
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজাউদ্দিন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন জামায়াতে আমিরের নাম দেয়া হয়েছিল। অথচ বিএনপি নেতা নাসির তাকে নাম তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছিলেন। এরই প্রতিবাদে সমাবেশ করার সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালান। হামলায় আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন।’
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, একটি স্কুল ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।