হিলিতে উচ্চ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ মালবেরি ফল আবাদ

দিনাজপুরের হিলিতে চাষ হচ্ছে উচ্চ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ মালবেরি ফল। বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মতো ফলটির চাষ শুরু করেছেন কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার।

দিনাজপুরের হিলিতে চাষ হচ্ছে উচ্চ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ মালবেরি ফল। বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মতো ফলটির চাষ শুরু করেছেন কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার। কৃষি বিভাগ বলছে, তুঁত ফলের ইংরেজি নাম মালবেরি। এটি মিষ্টি ও পুষ্টিকর ফল হিসেবে পরিচিত। তুঁত গাছের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে এবং এর ফল সাধারণত কালো, লাল বা সাদা রঙের হতে পারে। মালবেরি নামটি পরিচিত না থাকলেও গ্রামাঞ্চলে ফলটিকে তুঁত ফল হিসেবে চেনে সবাই। তুঁত গাছের পাতা রেশম উৎপাদনের গুটিপোকার প্রিয় খাদ্য। সে হিসেবে এটি তুঁত ফল হিসেবেই বেশি পরিচিত।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, মালবেরি ফল ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফাইবার এবং বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ, যা স্বাস্থ্যকর খাদ্যের একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত। মালবেরি আয়রনসমৃদ্ধ, তাই এ ফল গ্রহণে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে রক্তস্বল্পতা রয়েছে এমন মানুষের জন্য এ ফলটি অত্যন্ত উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য পাকা তুঁত ফল উপকারী। এছাড়া পাকা ফল বায়ু ও পিত্তনাশক, দাহনাশক, কফনাশক ও জ্বরনাশক। তুঁত গাছের ছাল ও শিকড়ের রস কৃমিনাশক।

হিলির খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের মংলা বালিপুকুর গ্রামের কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার তার লিচুর বাগানে দুই বছর আগে একটি মালবেরি গাছের চারা রোপণ করেন। পরের বছরই গাছে ফল আসতে শুরু করে। গত বছর ১৬ হাজার টাকার ফল ও ১৮ হাজার টাকার চারা বিক্রি করেছেন। ফলটির আবাদ ছড়িয়ে দিতে চারা উৎপাদন করছেন রোকনুজ্জামান।

কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার বলেন, ‘দুই বছর আগে সিলেটে মালবেরি ফলের গাছ দেখেছিলাম। ফলটি সুন্দর দেখতে ও সুস্বাদু হওয়ায় একটি চারা সংগ্রহ করে আমার লিচু বাগানে রোপণ করেছি। পরের বছরই গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রথমে ফলটি সবুজ আকার ধারণ করে, এরপর লাল বর্ণের হয়। পুরোপুরি পেকে গেলে কালো হয়ে যায়।’

কাঁচা অবস্থায় সবুজ বর্ণের মালবেরি একটু টক। হালকা পাকা ধরলে লাল বর্ণের হয়, তখন টক-মিষ্টি। আর পুরোপুরি পেকে কালো বর্ণের হয়ে গেলে প্রচুর মিষ্টি লাগে ফলটি।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, হিলির মংলা গ্রামের কৃষক রোকনুজ্জামান সরকার প্রথমবারের মতো মালবেরি ফলের আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে তার গাছে ফল আসতে শুরু করেছে। ফল বিক্রিও করছেন তিনি। মালবেরির চারাও উৎপাদন করছেন। তবে যারা এ ফল চাষে আগ্রহী তারা প্রথমবার একটি বা দুটি গাছ দিয়ে শুরু করবেন। সফল হলে পরবর্তী সময় বড় পরিসরে চাষের পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি ফলের আবাদ বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানিয়েছেন।

আরও