রাজশাহীর চরাঞ্চলে পদ্মা নদীর ভাঙন

রাজশাহীতে শ্রাবণের শুরু থেকেই ভয়াবহ রূপ নিতে থাকে পদ্মা নদী। ক্রমেই বেড়েছে পানি।

রাজশাহীতে শ্রাবণের শুরু থেকেই ভয়াবহ রূপ নিতে থাকে পদ্মা নদী। ক্রমেই বেড়েছে পানি। অন্যদিকে ভারত থেকে আসা গঙ্গার অতিরিক্ত পানির কারণে নদীতে স্রোত বেড়েছে। এরই মধ্যে বাঘা উপজেলায় নদীপাড়ের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এলজিইডির এক কিলোমিটারের পাকা রাস্তার প্রায় অর্ধেক বিলীন হয়ে গেছে। আতঙ্কে রয়েছে উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষ।

জানা গেছে, বাঘা উপজেলার পদ্মাপাড়ে অবস্থান চকরাজাপুর ইউনিয়নের। ১১টি চরে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বাস। ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযমের বাড়ি থেকে কালীদাসখালীর বাবলু শিকদারের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করেছিল সড়ক বিভাগ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এ রাস্তার প্রায় অর্ধেক পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

চরাঞ্চলের বাসিন্দারা বলছেন, বাঁধ নির্মাণের আগে রাস্তা, কয়েকটি স্কুল, মসজিদ, কয়েক হাজার একর আমবাগান, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যে রাস্তা নদীতে ভেঙেছে, তা আর ফিরে আসবে না। তাই বিকল্প হিসেবে শিমুলতলার দিক দিয়ে রাস্তা তৈরি হলে দুর্ভোগ কিছুটা কমত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চকরাজাপুর, কালীদাসখালী, লক্ষ্মীনগর, দাদপুর, উদপুর, পলাশী ফতেপুর, নিচ ফতেপুর পলাশীসহ আটটি চরে ২ হাজার ৪৮৬ গ্রাহক বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। পদ্মার ভাঙন রোধে ১২ কিলোমিটার এলাকায় ৮২২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে।

চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘কয়েক বছরে কালীদাসখালী, লক্ষ্মনগর, চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় পদ্মায় হয়ে যাওয়ায় অন্যত্র সরে নেয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েক হাজার আবাদি জমি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। আমার ২৫ বিঘা জমি বিলীন হয়ে গেছে। এখন কোনো আবাদি জমি আমার নেই।’

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান বলেন, ‘সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতায় এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা করা হয়েছিল। পরে আরো পাঁচ কিলোমিটার করা হয়েছে। আরো পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ও একটি সেতু নির্মাণ করা হলে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। তবে এক কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগই পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে।’

এ ব্যাপারে বাঘা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বলেন, ‘আবদুল হালিম মোল্লা মাস্টারের বাড়ির দক্ষিণ পাশে ৬০০ মিটার সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে অনুমদোন পাওয়া যায়নি। কিছু পাকা রাস্তা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।’

আরও