নরসিংদীতে প্রকাশ্যে ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাফর ইকবাল মানিক (৫২) দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাফর ইকবাল মানিক (৫২) দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন। গতকাল বিকাল ৪টার দিকে তিনি ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে একটি সালিশে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

নিহত মানিক মির্জারচর গ্রামের . মোতালিব ফকিরের ছেলে। মানিক টানা দুবার মির্জারচর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফারুকুল ইসলাম ফারুক আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, কিন্তু তত্কালীন চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা জাফর ইকবাল মানিক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। বিজয়ী হওয়ার পর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দেয়। বিরোধের একপর্যায়ে ফারুকসহ তার সমর্থকরা গ্রামছাড়া হয়ে পড়েন। প্রায় আড়াই মাস বিভিন্ন এলাকায় গ্রামছাড়া থাকার পর ফারুকের সমর্থক লোকজন এক হয়ে গ্রামে ফেরার চেষ্টা করেন। সময় মির্জারচরের নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক তাদের সমর্থকরা বাধা দেন। তাদের বাধার মুখে ফারুকুল ইসলাম তার সমর্থকরা গ্রামে উঠতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ফারুকুলের চাচাতো ভাই রুবেল নিহত হন।

গত শুক্রবার মির্জারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাফর ইকবাল মানিক নৌকা প্রতীকের পরাজিত চেয়ারম্যান ফারুকুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে শান্তিপুর গ্রামে সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সালিশে কোনো সমাধান হয়নি। গতকাল বিকালে আবারো ওই সালিশে যাওয়ার পথে তাকে দুই সন্ত্রাসী গুলি করে পালিয়ে যায়। সময় তার সঙ্গে থাকা লোকজন তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে নৌকাযোগে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিকের ভাই বাসন মিয়া জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ মির্জাচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরাজিত প্রার্থী ফারুকুল ইসলামের পিতা ফিরোজ মিয়ার সমর্থকরা গুলি করে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসাদ আবদুল্লাহ খান জানান, চেয়ারম্যান মানিককে মৃত অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তিনি বুকের বাঁ পাশে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

রায়পুরা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিত ঘোষ জানান, চেয়ারম্যান গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও