ঠাকুরগাঁওয়ে ঝড়ে বিধ্বস্ত ২০ গ্রাম, দুই নারীর মৃত্যু

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ১২ মিনিটের ঝড়ে ২০টি গ্রাম বিধ্বস্ত হয়েছে। উড়ে গেছে টিনের চালা, গাছ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ১২ মিনিটের ঝড়ে ২০টি গ্রাম বিধ্বস্ত হয়েছে। উড়ে গেছে টিনের চালা, গাছ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। ঝড়ের কবলে পড়ে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোর ৫টার দিকে উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যায় কালবৈশাখী।

নিহতরা হলেন উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের শালডাঙ্গা গ্রামের পইনুল ইসলামের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), একই গ্রামের দবিরুল ইসলামের জাহেদা বেগম (৫০)।

পইনুল ইসলাম জানান, সকালে ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে ঝড় শুরু হয়। বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে বারান্দায় পড়ে থাকা টিন ও ছাউনি সরিয়ে দেখেন চাপা পড়ে আছেন তার স্ত্রী ফরিদা বেগম। পরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পাড়িয়া ইউনিয়নের গ্রামপুলিশ আজিজুর রহমান জানান, ঝড়ের সময় বারান্দা বসেছিলেন দবিরুল ইসলামের স্ত্রী জাহেদা। মেঘের গর্জন আর ঝড়ে গাছপালা ভাঙতে দেখে বারান্দায়ই মারা যান তিনি।

দবিরুল ইসলাম জানান, তার স্ত্রী দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। ঝড়ের সময় ভয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করছেন তারা।

সরজমিনে দেখা গেছে, ঝড়ে পাড়িয়া ইউনিয়নের তিলকড়া, শালডাঙ্গা, বঙ্গভিটা, লোহাড়া, বামুনিয়াসহ ১২টি গ্রাম বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া বড়বাড়ী ইউনিয়নের বেলহাড়া, বেলবাড়ী, বটেরহাট, হরিপুরসহ আরো আটটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব গ্রামের বেশির ভাগ ঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়েছে ঘরের ওপর। বড়বাড়ী ইউনিয়নের আধারদিঘী বাজারে পাঁচটি দোকান এবং দুটি হোটেলের ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে।

লোহাড়াগাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান জানান, ঝড়ে তাদের স্কুলের হলরুম টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। বিদ্যালয়টির প্রবেশদ্বারে গাছ ভেঙে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটির ওপর। এছাড়া লোহাড়া থেকে বঙ্গভিটা যাওয়ার রাস্তায় একাধিক গাছ ভেঙে পড়েছে। বড়বাড়ী ইউনিয়নের আধারদিঘী থেকে হরিণমারী যাওয়ার রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়ে চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু গাছ কেটে সরিয়ে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বালিয়াডাঙ্গী জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানান, ঝড়ে ৪০টির বেশি বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়েছে। এছাড়া অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে। বালিয়াডাঙ্গী বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি সব এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন কাজ করছে।

আরও