খেজুর আমদানিতে জটিলতা কমাতে অভিন্ন শুল্কহার নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী বাজেটে সব ধরনের খেজুর আমদানিতে ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে। ফলে বাজারে প্রচলিত খেজুরের আমদানি শুল্ক প্রায় ৪৮ শতাংশ বাড়বে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ কাস্টমস ট্যারিফ অনুযায়ী, বর্তমানে চারটি এইচএস কোডের অধীনে ফ্রেশ ও ড্রায়েড খেজুর আমদানি হয়। চার এইচএস কোডের শুল্কহারও ভিন্ন—২৫, ১০, ৫৮ দশমিক ৬০ ও ৩৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। খেজুর আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে বেশির ভাগ খেজুরই ফ্রেশ ক্যাটাগরির। এ ক্যাটাগরিতে আমদানি করতে ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়।
খেজুরের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘খেজুর আমদানির পর গড় মূল্য কম হলেও চড়া দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া সব ধরনের খেজুরই একটিমাত্র এইচএস কোডের অধীনে আমদানি হচ্ছে এবং বেশি দামের খেজুরও কম দাম দেখিয়ে আমদানি করা হচ্ছে। ফলে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। এজন্য খেজুর আমদানিতে অনিয়ম কমিয়ে আনতে এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার।’
সিলেটের খেজুর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইউসুফ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মাহফুজুল হক বলেন, ‘দেশে ফ্রেশ খেজুরই বেশি আমদানি হয়। শুকনা খেজুর আমদানি হয় খুব কম। ফ্রেশ খেজুরের শুল্কহার ১০ শতাংশ। তবে অভিন্ন শুল্কহার করা হলে খেজুরের দাম অনেক বেশি পরিমাণে বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষ আর খেজুর কিনে খেতে পারবে না। এছাড়া শুল্কহার বাড়ানোর পর যদি খেজুরের কেজিতে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয় তাহলেও দাম বাড়বে।’
কাস্টম হাউজের তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪০ হাজার ২৪ টন খেজুর আমদানি হয়েছে। এগুলোর গড় মূল্য কেজিতে ৮৯ টাকা ৩৬ পয়সা। তবে পাইকারি বাজারে বিভিন্ন জাতের খেজুর বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। আমদানি তথ্য ও বর্তমান বাজারদরে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। আজওয়া, মেজডুল, মাবরুক, সাফওয়া, মরিয়ম প্রভৃতি উন্নত জাতের খেজুর আমদানি করলেও রাজস্ব ফাঁকি দিতে সেগুলোর দাম কম দেখিয়ে দেশে আনা হয়। দেশের বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের খেজুর ২৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আগামী বাজেটে প্রসাধনপণ্য ফেসওয়াশেরও অভিন্ন শুল্কহার নির্ধারণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এনবিআর সূত্র। দেশে সাধারণত দুটি আলাদা এইচএস কোডের অধীনে বিভিন্ন রকম ফেসওয়াশ আমদানি হয়। এগুলোর শুল্কহার যথাক্রমে ১২৭ দশমিক ৭২ ও ১৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে কর আহরণ বাড়াতে এবং শুল্ক আহরণে জটিলতা কমাতে সরকার সব ধরনের ফেসওয়াশ আমদানির ক্ষেত্রে ১৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণ করছে বলে জানা গেছে।