বর্ষার আগেই রাজশাহীর চারঘাটে পদ্মা নদীতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এরই মধ্যে উপজেলার গোপালপুর ও চন্দনশহর গ্রামের নদীর তীরসংলগ্ন কিছু কৃষিজমি বিলীন হয়ে গেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদীপারের বাসিন্দারা। ভাঙন অব্যাহত থাকলে উপজেলার পাঁচ-ছয়টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ বলছে, সাধারণত বর্ষা মৌসুমে ভাঙন দেখা গেলেও এবার ব্যতিক্রম। শুষ্ক মৌসুমেই দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ। এটি ভেঙে গেলে বর্ষা মৌসুমে প্লাবিত হতে পারে তীরবর্তী চন্দনশহর ও গোপালপুরসহ পাঁচ-ছয়টি গ্রাম।
নদীপারের অধিকাংশ বাসিন্দাই কৃষিকাজ আর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিম্নআয়ের এসব মানুষের কারো কারো বসতভিটা ছাড়াও কয়েকশ বিঘা কৃষিজমি ছিল। তবে বিভিন্ন সময় বসতভিটা ও কৃষিজমি হারিয়ে তারা অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন। অনেকেই হয়েছেন গৃহ ও কর্মহীন।
চন্দনশহর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙনকবলিত মানুষের আহাজারি শোনার কেউ নেই। তাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখার কেউ নেই। ভাঙন রোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। ভাঙন ঠেকাতে প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে—পানি উন্নয়ন বোর্ডের এমন আশ্বাসের বাণী প্রতিবারই শোনা যায়। তবে বছরের পর বছর কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায় না। যেসব স্থানে বাঁধ নির্মাণ করা হয়, নিম্নমানের হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে ভেঙে যায়।’
বিগত সময়ে পদ্মা নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলনের কারণে নদীর দিক পরিবর্তন হয়েছে। ফলে অসময়ে ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেন নদীপারের বাসিন্দারা।
এ ব্যাপারে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ সরকার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, ‘পদ্মা নদীর বাঁধটি অরক্ষিত। এ কারণে ধীরে ধীরে বাঁধ ভাঙছে। বিভিন্ন সময় অনেকেই ভিটেমাটি হারিয়েছেন। কৃষকদের ফসল রক্ষা ও বন্যা মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে যেখানে প্রয়োজন হবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’