প্রথম শ্রেণীর হলেও ঝিনাইদহ পৌরসভায় গড়ে ওঠেনি পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। শহরের ছোট-বড় সব খাল, পুকুর ও নালা ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশনের পথ। মাসের পর মাস সুয়ারেজ লাইনের ময়লা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উপশহর পাড়ার রাস্তাঘাট। মহল্লার অলিগলি ও সড়কগুলোর কোথাও কোথাও হাঁটুসমান পানি।
পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ড্রেনের ঢাকনা ভাঙা। ঢাকনা না থাকায় মানুষের যাতায়াত এবং যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ড্রেন সংস্কার না করায় আবর্জনা জমে গেছে। এ কারণে ড্রেনের পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।
পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেশমা খাতুন বলেন, ‘নামেই পৌরসভায় বাস করি আমরা। রাস্তাঘাট বেহাল। নেই সড়ক বাতির ব্যবস্থাও। সন্ধ্যা নামলেই যেন তৈরি হয় ভূতুড়ে পরিবেশ।’
ড্রেনের পানি রাস্তা উপচে পড়লেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবকের। তিনি বলেন, ‘উপশহর পাড়ার মানুষ যেন অভিভাবকহীন। পৌরসভার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা।’
জিকু হাসান নামে আরেক বাসিন্দা জানান, এ এলাকায় কোনো সুস্থ মানুষের বসবাসের মতো অবস্থা নেই। বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। ড্রেনের ময়লা পানিতে বংশবিস্তার করছে মশা-মাছি। ময়লা পানির কারণে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৮ সালে ঝিনাইদহ পৌরসভা গঠিত হয়। শুরুতে ‘গ’ শ্রেণীর মর্যাদা পেলেও ১৯৮১ সালে ‘খ’ শ্রেণীতে এবং ১৯৯১ সালে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নীত হয়।
পৌর শহরে চলাচলকারী অটোরিকশা চালকরা জানান, উপশহর পাড়ায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া বেহাল সড়কের কারণে রিকশা চালাতে কষ্ট হয় তাদের। মাঝেমধ্যেই রিকশার যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। যাত্রীরাও অনেক সময় রিকশায় উঠতে চান না।
ওই এলাকার বাসিন্দা আজিজুর রহমান জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায়। কিন্তু পানি নামার কোনো ব্যবস্থা নেই। ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বারো মাসই সড়কে জলাবদ্ধতা থাকে।
এ ব্যাপারে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ড্রেন অকেজো হওয়ায় পানি বের হওয়ার কোনো পথ নেই। ময়লা-আবর্জনা প্রতিনিয়ত ড্রেনে ফেলার কারণে পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত টেকসই ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক সংস্কার করা হবে।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামাল উদ্দীন বলেন, ‘ওখানে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে থাকছে। ড্রেন সংষ্কারে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।’