২৩ দিন পর খুলেছে টিএনজেড কারখানা

বকেয়া বেতন দাবিতে বেক্সিমকো শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

বকেয়া বেতন দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা।

বকেয়া বেতন দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। গতকাল সকালে গাজীপুর মহানগরের চক্রবর্তী এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সড়কের দুই পাশে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।

এদিকে বেতন-ভাতা নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বন্ধ থাকা টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানাটি ২৩ দিন পর খুলে দেয়া হয়েছে। সকাল থেকেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়।

কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা জানান, গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও বন্ধ হওয়া কারখানা চালুসহ কয়েক দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। সর্বশেষ ৯-১১ নভেম্বর রাত ১০টা পর্যন্ত টানা তিনদিন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ওইদিন বিকালে আন্দোলনরত শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে শ্রম মন্ত্রণালয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেন বিজিএমইএ ও কারখানা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বৈঠকে শ্রমিকদের পাওনা দুই দফায় ১৭ নভেম্বর ও ৩০ নভেম্বর পরিশোধ করা এবং বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

কারখানার নির্বাহী পরিচালক মাকসুদুল রহমান চৌধুরী জানান, বকেয়া বেতন পরিশোধ করায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এখন কারখানায় আর কোনো গোলযোগ নেই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই শ্রমিকরা কাজ করছেন।

অন্যদিকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা অক্টোবরের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখায় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা আন্দোলন করে বেতন আদায় করছেন। চলতি মাসেও আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন পরিশোধ করা হলেও বেক্সিমকোর শ্রমিকরা পাননি। বেতন দাবিতে কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা কারখানা থেকে কিছু সামনে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবরোধ সৃষ্টি করেন।

শিল্প পুলিশ জানায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতনের পরিমাণ ৮০-৮২ কোটি টাকা। প্রতি মাসের ৭-১০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতন দেয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় এখন বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। এ কারণে তারা গত বৃহস্পতিবার আন্দোলন শুরু করেন। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তারা চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

কাশিমপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকেও শ্রমিকদের অবরোধ অব্যাহত ছিল। বেতন পরিশোধের আশ্বাস না পেলে তারা মহাসড়ক ছেড়ে যাবেন না বলে জানিয়েছেন।

আরও