মুন্সিগঞ্জে
ভোক্তা পর্যায়ে সরকারনির্ধারিত দামে ট্রাকে করে আলু বিক্রি করছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে ৩৬ টাকা দরে
বিক্রি করা আলুর প্রায় ৮০ শতাংশই নষ্ট
বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা। দীর্ঘদিন ধরে মজুদ রাখা ও খাওয়ার অনুপযোগী
আলু কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্রেতারা। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের তদারকি করা দরকার এমন বক্তব্য ভোক্তার। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, আলুর দাম বাড়া নিয়ে অস্থিরতা ঠেকাতে ২ নভেম্বর খোলা ট্রাকে দ্বিতীয় দফায় আলু বিক্রি শুরু হয়। এর আগে প্রথম দফায় ২১ সেপ্টেম্বর বাজার নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে আলু বিক্রি শুরু হলেও এক সপ্তাহ পর বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্বিতীয় দফায় খোলা ট্রাকে আলু বিক্রি শুরু হয়। প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টায় বিক্রি হয় প্রায় ৪০০ ব্যাগ আলু। সম্প্রতি আলুর বাজার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবু ট্রাক থেকে আলু কিনতে আগ্রহের কমতি নেই ক্রেতাদের। তাদের অভিযোগ, ট্রাকের আলুর প্রায় ৮০ শতাংশই খাবার অনুপোযোগী।
অবশ্য অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘হিমাগারে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিছু অসৎ ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায়, দীর্ঘদিন মজুদ করে রাখা পচন ধরা আলু ট্রাকে করে বিক্রি করছেন। আমরা ব্যবসায়ী হলেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি না। এতে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। সাধারণ ক্রেতাদের এমন অভিযোগ নিয়মিতই পাচ্ছি। যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়, আমার একার পক্ষে তো আর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তবু আমার ব্যক্তিগত আলু যতটুকু রয়েছে আমি চেষ্টা করি, ভালো আলু ট্রাকে বিক্রি করার।’
গতকাল সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের ধলাগাঁও বাজার, মুন্সিগঞ্জ কাঁচাবাজার ও মুন্সিরহাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ট্রাকে মূল্য তালিকা টানিয়ে প্লাস্টিকের ব্যাগে আগে থেকেই প্যাকেট করে রাখা আলু বিক্রি করা হচ্ছে। অধিকাংশ ক্রেতাই খাবার অনুপযোগী আলু দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করেন। নুরু মিয়া নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আমার ১০ সদস্যের সংসারে প্রতি মাসে অন্তত ২০-২৫ কেজি আলু লাগে। খুচরা বাজারে দাম বেশি তাই ট্রাক থেকে আলু কিনি। গত কয়েক দিন বেশ কয়েকবার আলু কিনেছি কিন্তু অধিকাংশই খাওয়ার অনুপযোগী। পাঁচ কেজি আলুর মধ্যে দুই কেজি খাওয়ার উপযোগী ছিল। প্রশাসনের সাইনবোর্ড টানিয়ে যদি পচা আলু বিক্রি হয় ৩৬ টাকা কেজি, তবে গরিব মানুষ যাবে কোথায়?’