উত্তরের শীতপ্রবণ জেলা পঞ্চগড়ে টানা পাঁচ দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে প্রতিদিনই সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত শীত পড়ছে। হেমন্তেই এবার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) দেশের সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।
এর আগে গতকাল সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি, বুধবার (২৭ নভেম্বর) সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করেছে উত্তর জনপদের এই জেলায়।
উত্তরের এই জনপদে সকাল থেকে জেলা জুড়ে কুয়াশার দেখা না মিললেও হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা অনুভূত হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মেলায় শীতের তীব্রতা কমতে থাকে। দিনের বেলায় ২৮ থেকে ২৯ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে তাপমাত্রা।
শনিবার সকালে গায়ে গরম কাপড় জড়িয়ে কাজের সন্ধানে বের হয়েছে শ্রমজীবী মানুষেরা। তবে বেলা গড়িয়ে বিকাল হতেই জেলায় প্রতিদিনের মতো শুরু হয় শীতের তীব্রতা। রাতভর তীব্র শীত অনুভূত হয় । প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে কমে আসছে তাপমাত্রার পারদ। রাতভর পড়ছে কুয়াশা।
হাট বাজারগুলোতে রাত আটটার পর থেকে লোক সমাগম কমে যাচ্ছে। জেলার শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে লেপ-তোশকের বিক্রি। বিভিন্ন ডিজাইনের শীতের কাপড় শোভা পাচ্ছে কাপড়ের দোকানগুলোতে। বিশেষ করে শিশুদের নানা ধরনের গরম কাপড় ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানগুলোতে। জেলার প্রধান বাজার রাজনগড় বাজারে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান বসেছে। সন্ধ্যার পর পিঠার দোকানগুলোতে ভোজনপ্রেমীরা পিঠা খেয়ে শীত উপভোগ করছেন।
এদিকে শীত এলেই শিশু ও বয়স্কদের রোগ বালাই বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি । পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ১০০ শয্যার বিপরীতে দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ জানান, গত পাঁচদিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে তেঁতুলিয়ায়। সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মেলে, সূর্য উঠলেই কুয়াশা বিদায় নেয়।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী জানান শীত মোকাবেলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে জেলা প্রশাসনের । গরিব-দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। দুই লাখ শীতবস্ত্র চাহিদা দিয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।