খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। বুধবার দিবাগত রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
কুয়েট উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা প্রায় ৫৮ ঘণ্টা পর তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। বুধবার দিবাগত রাত একটার দিকে তাদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য (ইউজিসি) অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান।
অনশন ভাঙানোর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি বার্তা অনশনরত শিক্ষার্থীদের পড়ে শোনান তিনি। বার্তায় বলা হয়েছে— সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে সমস্যা নিরসন ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে কুয়েটের উপাচার্য ও সহউপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পরিচালনার লক্ষ্যে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্যে থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওই বার্তা পাওয়ার পর ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। এসময় সেখান থেকে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। এরপর হলে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার কুয়েট ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন ও অনশন ভাঙতে অনুরোধ করেন। তবে শিক্ষার্থীরা সেই অনুরোধ না রেখে তাদের দাবিতে অনড় থাকেন।
এছাড়া, একই দিনে জরুরি সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়া এবং আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে, কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনার জেরে ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতে ১৪ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ৩৭ জনকে বহিস্কারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভিসির পদত্যাগ দাবি করে ওইদিন থেকেই আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।