রাজশাহী অঞ্চলে দিনে-রাতে চলছে লোডশেডিং। মহানগরী ছাড়াও আশপাশের জেলা, উপজেলা ও গ্রামীণ জনপদের মানুষ দিন-রাতের অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। বিদ্যুতের অভাবে চলতি আমন মৌসুমে সেচ পাম্পগুলো ঠিকমতো চালানো যাচ্ছে না। এতে আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
বিদ্যুতের ব্যাপক ঘাটতির কথা ভুক্তভোগীরা জানালেও নেসকোর কর্মকর্তারা দাবি করছেন, কোথাও লোডশেডিং নেই। অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, বিদ্যুতের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে গ্রামীণ জনপদে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
মহানগরীর মহিষবাথানের বাসিন্দা খন্দকার জামিরুল হক বলেন, ‘চারদিন ধরে নগরীজুড়ে ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে-রাতে কম করে সাত-আটবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬-৭ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। ভাদ্রের গরমে বিদ্যুৎবিহীন বাসাবাড়িতে টেকাই মুশকিল। নগরীর সাহেববাজারে আমার দোকান। সেখানেও দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ মিলছে না।’
নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে একবার বিদ্যুৎ গেলে দেড়-দুই ঘণ্টার আগে আর আসে না। রাতেও তিন-চারবার বিদ্যুতের যাওয়া-আসা চলছে।’
ব্যাপক লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে পাশের নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর থেকে। এসব জেলায় নেসকোর অধিভুক্ত গ্রাহকও সমানভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নেসকোর এলাকা বাদে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরাও চরম ভোগান্তির শিকার। রাজশাহীর গ্রামাঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে আছে পল্লী বিদ্যুতের কয়েক হাজার গ্রাহক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নেসকোর রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল মিলে বিদ্যুতের চাহিদার চেয়ে ৩০-৩৫ শতাংশ কম আসছে জাতীয় গ্রিড থেকে। পুরো অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করতে হচ্ছে নেসকোকে। এ অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো মোট চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাচ্ছে। ফলে গ্রাহক ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আর্থিক কর্মকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা গেছে, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে বেশির ভাগ বিদ্যুৎ আসে ভারতের ঝাড়খণ্ড আদানির কোম্পানি থেকে। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, ‘নেসকোয় কোনো লোডশেডিং নেই। কোনো কারণে হয়তো বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকতে পারে।’
গ্রাহক যে ভোগান্তির কথা বলছেন তা কি মিথ্যা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে দেখছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’